দশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসেরসিগারেটে কর বাড়ানোর আহ্বান এমপিদের
No icon

দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ

আগামী অর্থবছরে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাটাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ। ডলার সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আবার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় দুই খাতের একটি রেমিট্যান্স, তথা প্রবাসী আয়ও নিম্নমুখী। অবশ্য প্রধান খাত পণ্য রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ শতাংশ। এই সময়ে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সেই সুবাদে পণ্য রপ্তানিতে আয় দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে রপ্তানি খাত যখন ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে, তখনই এল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত। ইতিমধ্যে পণ্য রপ্তানির বড় বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বেড়ে সেখানকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর। যেমন গত মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমে ২৩ শতাংশে নেমেছে, যা আগের মাস এপ্রিলে ছিল ৫১ শতাংশ। বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাটাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।
তিন দশক ধরে দেশের পণ্য রপ্তানির মেরুদণ্ড তৈরি পোশাক খাত। মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাকশিল্প থেকে আসছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৫২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানির রেকর্ড।

সামগ্রিক রপ্তানিতে সরকার যে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে, তার বড় অংশই পায় তৈরি পোশাক। করপোরেট করেও বড় সুবিধা পাচ্ছে খাতটি। বর্তমানে এই শিল্পের পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা ১০ শতাংশ ও অন্যান্য কারখানা ১২ শতাংশ হারে করপোরেট কর দেয়। যদিও অন্যান্য খাতের করপোরেট কর ৩০ শতাংশ। বস্ত্র খাতে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ। আবার পোশাক খাত শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানিতে বন্ড সুবিধা পেলেও, অন্যান্য শিল্পে সুযোগটি সীমিত।
অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে পোশাক খাতের মতো সমান সুযোগ দাবি করে আসছেন। তাঁরা বলছেন, পোশাক খাতকে সরকার যেভাবে দুহাত ভরে সুবিধা দিয়েছে, সেভাবে সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতকেও দিলে রপ্তানি নিঃসন্দেহে বাড়বে।

চলতি অর্থবছরে তৈরি পোশাকের পর পণ্য রপ্তানি আয়ে একসঙ্গে শতকোটি ডলার ছাড়িয়েছে চারটি খাত হোম টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ধরা হচ্ছিল চামড়া খাতকে। তবে হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়াশিল্প নগরে ট্যানারি স্থানান্তরের পর খাতটি পথ হারিয়ে বসে। পরিবেশদূষণের কারণে ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা সরাসরি বাংলাদেশের চামড়া কিনছে না।

দীর্ঘদিন ধরে নতুন রপ্তানি পণ্য ও বাজার খুঁজে বের করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তবে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। সিরামিক, আসবাব, টুপি, কাঁকড়া, কুঁচে, ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দেওয়া হলেও রপ্তানি সেই হারে বাড়ছে না।