ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

বাতিল হচ্ছে শুল্ক-কর পরিশোধের কাগুজে ব্যবস্থা

আগামী জুলাই মাস থেকে পে অর্ডার বা চালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধ করা যাবে না। কাগুজে শুল্ক-কর পরিশোধের ব্যবস্থা আর থাকছে না। মালামাল আমদানি করলে দুই লাখ টাকার বেশি শুল্ক-কর হলেই ই-পেমেন্ট করতে হবে। দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে সব আমদানিকারকের জন্য ই-পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বক্তৃতায়ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ ঘোষণা করবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ইতিমধ্যে এর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। গত এপ্রিল থেকে রাজধানীর কমলাপুর আইসিডিতে পরীক্ষামূলকভাবে ই-পেমেন্ট চালু হয়েছে। এসাইকডু ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্ক-কর ও মাশুল পরিশোধ করা যাবে। প্রাথমিকভাবে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে শুল্ক-করের টাকা পরিশোধ করা যাবে। পরে অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধ করা যাবে বলে জানা গেছে। শুধু আমদানি নয়, রপ্তানির ক্ষেত্রে যদি শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়, তা-ও করা যাবে।

প্রথম ছয় মাস, অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু দুই লাখ টাকার বেশি শুল্ক-কর হলেই ই-পেমেন্ট করতে হবে। ছয় মাস পর, অর্থাৎ ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধের সীমা থাকবে না। সব আমদানিকারককেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে।

এ বিষয়ে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় শুল্ক-কর পরিশোধের ব্যবস্থা চালু হলে বন্দরে মালামাল খালাসের সময় অনেক কমে যাবে। এতে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে, যা বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসা করা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হবে।

ই-পেমেন্ট ব্যবস্থায় আমদানিকারক বা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের ব্যাংক হিসাব থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ট্রেজারিতে অর্থ পরিশোধ করা যাবে।ফলে আমদানিকারক বা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নির্বিঘ্নে দ্রুত রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবেন। এতে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর পরিশোধে জালিয়াতির ঝুঁকি কমে যাবে। আমদানি পর্যায়ে আমদানি শুল্কের পাশাপাশি সম্পূরক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট, অগ্রিম করসহ বিভিন্ন ধরনের শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়।
আমদানিকারক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্ক-কর পরিশোধ করলেন। কিন্তু সঠিকভাবে তা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে, তা কীভাবে ওই আমদানিকারককে নিশ্চিত করা হবে। এ নিয়ে এনবিআর কাজ করছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকারক যাতে তাদের মুঠোফোনে সঙ্গে সঙ্গে বার্তা পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মুঠোফোন অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এর পাশাপাশি ব্যবসায় নিবন্ধন নম্বরের (বিআইএন) সঙ্গে আমদানিকারকের মুঠোফোন নম্বর ও ই মেইল ঠিকানা সংযুক্ত করার সুপারিশও উঠে এসেছে। আগামী ডিসেম্বরে আবার এসব বিষয় পর্যালোচনা করা হবে।এ ছাড়া এনবিআরের শুল্ক বিভাগ ও সোনালী ব্যাংক আমদানিকারক ও তাদের প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। তবে করোনার কারণে তা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ছাড়া বন্দরে শুধু শুল্ক-কর পরিশোধ করা হয়। বন্দরের নিজস্ব কিছু মাশুলও আছে। এসব মাশুল পরিশোধও যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-পেমেন্টে করা যায়, সেই ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে এনবিআর। এনবিআর মনে করে, এতে দ্রুত পণ্য খালাস করা যাবে। বন্দরে দীর্ঘ সময় পণ্যের চালান আটকে থাকবে না।

এখন ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু থাকলেও অর্থ পরিশোধ বাধ্যতামূলক নয়। ফলে ই-পেমেন্ট করেন, এমন আমদানিকারকের সংখ্যা খুবই কম। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু এর কাঙ্ক্ষিত সুফল গত তিন বছরে তেমন একটা মেলেনি।