TAXNEWSBD
‘স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে’
রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ২০:০১ অপরাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (এমএইচএম) প্লাটফরম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নারীদের কাছে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে উচ্চমূল্যই বড় বাধা। তাই স্যানিটারি প্যাডের ওপর থেকে সবধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে উৎপাদনকারী কম্পানিগুলোকে স্যানিটারি প্যাডকে অলাভজনক পণ্য হিসেবে তালিকাভূক্ত করতে হবে। সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএসর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি, বসুন্ধরা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এসিআই লিমিটেডের বাণিজ্যিক পরিচালক মো. কামরুল হাসান, স্কয়ার গ্রুপের সিনিয়র ব্রান্ড ম্যানেজার তাহসিনা খানম, আইসিসিডিডিআরবির জেন্ডার স্পেশালিস্ট ফারজানা করিম, কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক ড. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, টিজার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনিয়া হক, সেফার ওয়াল্ড-এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুন নাহার, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের ড. সমীর কুমার সাহা, ওয়াটার এইডর ইখতিয়ার উদ্দিন, রেড অরেঞ্জ-এর নকীব রাজীব আহমেদ প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন বিএনপিএসর প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন বেগম পাপ্পু।

বৈঠকে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর কোনোধরনের ভ্যাট থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি। তিনি বলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর নতুন করে ভ্যাট আরোপের কথা এনবিআর চেয়ারম্যান অস্বীকার করেছেন। আগামী বাজেটে এ সংক্রান্ত বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রাক বাজেট আলোচনায় যে কোনো পণ্যের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স তুলে দেওয়ার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। আগামীতে সেটা করা গেলে সরকারের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। তিনি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারসহ মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সচেতনতার জন্য ঘরে বাইরে উচ্চকণ্ঠ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বসুন্ধরা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে উত্থাপিত বিএনপিএসর প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, স্যানিটারি পণ্যের ওপর ১২৭ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। অথচ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে আইন করে সকল ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে এটা করা গেলে স্যানিটারি প্যাডের মূল্য ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। তাদের কম্পানি এই পণ্যটি উৎপাদন খরচের বিনিময়ে বিতরণে উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি জানান।

এসিআই কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মূল্যের থেকে সচেতনতা বড় বিষয়। তাই মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের নিস্তব্ধতা ভেঙে সকলকে সচেতন করা জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

স্কয়ারের কর্মকর্তা তাহসিনা খানম বলেন, মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিষয়টিকে শিক্ষার একটি অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, সামাজিক নিয়মবিধি, বিশ্বাস বা রীতিনীতি এবং প্রচলিত ধ্যানধারণা মাসিকের সময় নারী ও মেয়েদের সামাজিক, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে তোলাসহ নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে। এ ছাড়াও পরিষ্কার পানি, উপযুক্ত স্যানিটেশন সুবিধা এবং আনুষঙ্গিক স্বাস্থ্যবান্ধব সুযোগ সুবিধায় সীমিত প্রবেশাধিকার নারীদের জন্য তাদের মাসিক স্বাস্থ্যের ব্যবস্থাপনাকে কঠিন করে তোলে। এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং মাসিকের সময় অনুকূল সেবা প্রদানমূলক পরিবেশ তৈরি করা ব্যতীত মাসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের অন্য কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সরকার ভ্যাট ট্যাক্স কমানোর পাশাপাশি বেসরকারি কম্পানিগুলো সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে কম খরচে মান সম্পন্ন ও আরামদায়ক স্যানিটারি প্যাড সরবরাহ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।