দশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসেরসিগারেটে কর বাড়ানোর আহ্বান এমপিদের
No icon

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বাড়ছে উপকারভোগী

বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তার ১২৩টি কর্মসূচি রয়েছে। ৩০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। অন্যান্য অধিকাংশ কর্মসূচিতেও বিশেষ পরিবর্তন আসছে না। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, ভিজিডি এবং তৃতীয় লিঙ্গ ও বেদে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস ও অন্যান্য রোগীর আর্থিক সহায়তা কর্মসূচিতেও বরাদ্দ বাড়ছে না। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নেও বরাদ্দের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বরং পল্লি ও শহর সমাজসেবা এবং পল্লি মাতৃকেন্দ্রের জন্য সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের বরাদ্দ প্রায় ৯০ কোটি টাকা কমিয়ে ৬১ কোটি টাকা রাখা হতে পারে।
জানা গেছে, মহামারি করোনার কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় কমেছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অন্যদিকে চাল, আটা, তেল, চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে দরিদ্র ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন হয়ে উঠেছে আগের চেয়ে কষ্টের। এ পরিস্থিতিতে গরিব মানুষের জীবনযাপন সহজ করতে দেশের অর্থনীতিবিদরা খাদ্য ও নগদ সহায়তা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী বাজেটে দরিদ্র মানুষের প্রতি নজর কিছুটা বাড়বে। বাড়ানো হবে মোট উপকারভোগীর সংখ্যাও। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বেশিরভাগ ভাতার পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আসন্ন অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন। সে লক্ষ্যে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। গত পাঁচ বছর ধরে বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীদের ভাতা বাড়েনি। এ দুই কর্মসূচিতে সরকার জনপ্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দিচ্ছে। এবারও তা অপরিবর্তিত থাকছে। আর প্রতিবন্ধীদের ভাতা গত দুই অর্থবছরের মতো ৭৫০ টাকাই থাকছে। এর আগে দুই অর্থবছর প্রতিবন্ধীরা ৭০০ টাকা করে ভাতা পেতেন। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা আট হাজার টাকা বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এজন্য অতিরিক্ত তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণেও বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। বর্তমানে সারাদেশে এক লাখ ৮৬ হাজার ৪০৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে থাকেন। আগামী অর্থবছরের বাজেটে তিনটি কর্মসূচিতে ভাতাভোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৩ হাজার জন বাড়ানো হচ্ছে। নতুন করে ১৫০ উপজেলার সকল বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীকে ভাতার আওতাভুক্ত করা হচ্ছে। এতে করে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ছে আট লাখ ৪০ হাজার ৯০০ জন। আরও ছয় লাখ ৯২ হাজার ৩৩৪ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ভাতা পাবেন। আর সারাদেশে চার লাখ প্রতিবন্ধীকে নতুন করে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। এজন্য বাজেটে মোট ৯৭০ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। বর্তমানে ৪৯ লাখ বয়স্ক, ২০ লাখ ৫০ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী এবং ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। বয়স্ক ভাতা বাবদ আগামী অর্থবছরে তিন হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৫০৪ কোটি টাকা বেশি। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীদের জন্য বরাদ্দ ২৬৫ কোটি টাকা কোটি বাড়িয়ে এক হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা করা হচ্ছে। আর অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা থেকে ২০০ কোটি বাড়িয়ে এক হাজার ৮২০ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে দুস্থ নারীদের অবস্থার পরিবর্তনে বেশ কিছু উদ্যোগ থাকছে আগামী বাজেটে। তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ, অতি গরিব নারীদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক লবণাক্ততা মোকাবিলার সক্ষমতা বাড়ানোসহ দুস্থ নারীদের সামগ্রিকভাবে জীবনমান উন্নয়নে বরাদ্দ ৩৩০ কোটি টাকা বাড়ানো হচ্ছে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অতিদরিদ্র নারীদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে 'ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভারনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট' নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে গত বছর জুনে। বর্তমানে প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় চলছে। এই দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম প্রসারিত করতে বাজেটে ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৫৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় এক লাখ নারী উপকৃত হবে।
উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবিলায় অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড) ১০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ৪৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ২২ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪৮ কোটি টাকা করা হচ্ছে। টেকসই গ্রিন হাউস প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নত কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে করোনার অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রশমনে বরাদ্দ আট কোটি টাকা বাড়িয়ে ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশের জন্য ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরে রয়েছে মাত্র সোয়া দুই কোটি টাকা। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশে কাজ করা সংস্থা জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বাড়াতে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা করা হচ্ছে।
গবেষণা সংস্থা পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, এখন যেসব ভাতা দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর পরিমাণ অনেক ছোট। ধাপে ধাপে কিছু বাড়ানো হয়েছে। আরও বাড়ানো দরকার। তবে এর জন্য সরকারের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত আরও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেক মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। বাজেটে এসব নতুন দরিদ্রসহ অন্য দরিদ্রদের অন্তর্বর্তীকালীন একটা সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। নতুন দরিদ্র ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কমপক্ষে মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া দরকার। এ সহায়তাকে প্রাথমিক ভিত্তি ধরে সরকার পরবর্তী সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারে।
চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়, যা বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ আর জিডিপির ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ প্রায় এক লাখ তিন হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে, যা সম্ভাব্য বাজেটের ৩ শতাংশ। তবে সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পেনশন ও সঞ্চয়পত্রের সুদে সামাজিক প্রিমিয়াম যুক্ত থাকায় অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করে আসছেন। তারা বলছেন, অবসরপ্রাপ্ত ও সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের যে সুবিধা দেওয়া হয়, তা সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় পড়ে না। কারণ অবসরপ্রাপ্ত ও সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের বড় অংশই সচ্ছল মানুষ। সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বড় করে দেখাতেই এ দুটি কর্মসূচির বরাদ্দ এ খাতে দেখায়। চলতি অর্থবছরের বাজেটে পেনশন বাবদ ২৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এ ছাড়া কয়েক বছর ধরে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারে সামাজিক নিরাপত্তা প্রিমিয়াম হিসেবে বাড়তি একটা অংশ যোগ করে মোট সুদহার নির্ধারণ করে সরকার। সামাজিক প্রিমিয়ামের মুনাফার অংশ সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। চলতি অর্থবছরে এ বাবদ ছয় হাজার ৬২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা আছে। যদিও বাজেটের প্রাক্কলনের চেয়ে এ খাতে ব্যয় বেশি হচ্ছে।
বাজেট অধিবেশন বসছে আজ :করোনাকালে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। এবারের বাজেট অধিবেশনও গত বছরের মতোই সংক্ষিপ্ত হবে।
আজ বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হওয়ার পর মুলতবি রাখা হবে। রেওয়াজ অনুযায়ী চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে পরবর্তী অধিবেশনের শুরুতেই শোক প্রস্তাবের পর দিনের অন্যান্য কার্যসূচি মুলতবি করা হয়। তবে সংসদ সচিবালয় থেকে আজকের দিনের কার্যসূচিতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রথম ৩০ মিনিট নির্ধারিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়-বিভাগের প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা এবং উত্তর রয়েছে। এ ছাড়াও একাত্তর বিধিতে মনোযোগ আকর্ষণের নোটিশ নিষ্পত্তির বিষয়টিও রাখা হয়েছে। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর দিনের অন্যান্য কার্যসূচি মুলতবি রাখা হবে বলে জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়। তবে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হতে পারে।
চলতি সংসদের দুই সদস্য আসলামুল হক গত ৪ এপ্রিল এবং আবদুল মতিন খসরু ১৪ এপ্রিল মারা যান। আজকের বৈঠকে তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গত ১১ মে বাজেট অধিবেশন আহ্বান করেন।
এবারের অধিবেশনেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে। সংক্ষিপ্ত ১২ কার্যদিবসের এই অধিবেশনে কয়েক দফায় বিরতি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এবারও অধিবেশনের আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হচ্ছে না। আগামীকাল বিকেল ৩টায় বাজেট প্রস্তাব ও অর্থ বিল উত্থাপন করা হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট হবে অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের তৃতীয় বাজেট এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ত্রয়োদশ বাজেট।
গত বাজেট অধিবেশনের মতো এবারও পালা করে সংসদ সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেবেন। প্রতি কার্যদিবসে উপস্থিতি সংখ্যা ১০০ থেকে ১২০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। এক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্য তিন থেকে চার কার্যদিবস অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন। অধিবেশনে অংশ নিতে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একবার করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদে পরপর দুই দিন অধিবেশনে যোগ দেওয়া যাবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজেট পেশের পরের দুই দিন বিরতি দিয়ে ৬ জুন থেকে বাজেট আলোচনা শুরু হবে। ৬ জুন সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হবে। ৭ জুন সম্পূরক বাজেট পাসের পর অধিবেশন আবারও মুলতবি করা হবে। এরপর টানা ছয় দিন বিরতি দিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা ১৪ জুন শুরু হবে। এই আলোচনা চলবে ১৫, ১৬, ১৭ ও ২৮ জুন। সাধারণ আলোচনা শেষে ২৯ জুন অর্থ বিল এবং ৩০ জুন মূল বাজেট ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস হবে। পরদিন ১ জুলাই বাজেট অধিবেশন শেষ হবে। অধিবেশনে বাজেট ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।