দশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসেরসিগারেটে কর বাড়ানোর আহ্বান এমপিদের
No icon

সঞ্চয়পত্রের নমিনি থাকলে কী, না থাকলে কী

যেহেতু আদালতের একটি রায় রয়েছে এবং এতে স্পষ্ট বলে দেওয়া রয়েছে যে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক মারা গেলে কে বা কারা টাকা পাবেন, ফলে এ নিয়ে আর বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। রায় মেনে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ২০১৭ সালেই। সেটি হচ্ছে গ্রাহক মারা গেলে টাকা পাবেন নমিনি। তারপরও জটিলতা রয়েই যায়, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর যা থেকে মুক্ত হতে পারেনি কখনোই। অধিদপ্তর গত সপ্তাহে এ বিষয়ে দুটি ভাগে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির কর্মসূচি পরিচালকের কাছে। একটি হচ্ছে মৃত গ্রাহকের নমিনি থাকলে কী হবে, আরেকটি হচ্ছে নমিনি না থাকলে কী হবে।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনার কার্যক্রম চালু হলেও কিছু বিষয় অসম্পূর্ণ থেকে গেছে এখনো। মূল গ্রাহক মারা গেলে নমিনি বা উত্তরাধিকারীরা কীভাবে তা পরিচালনা করবেন বা নগদায়ন করবেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা এখনো তৈরি হয়নি। এ নিয়েই গত সপ্তাহে শতাধিক আবেদনপত্রের কপি অনলাইন সিস্টেমে পাঠিয়েছে অধিদপ্তর।

নমিনি থাকলে

সঞ্চয় অধিদপ্তর বলেছে, গ্রাহক মারা গেলে সঞ্চয়পত্রের মালিকানা নমিনির নামে স্থানান্তর করা যাবে, নগদায়নও করা যাবে। সে ক্ষেত্রে পাঁচ ধরনের তথ্য ও কাগজপত্রের দরকার পড়বে। প্রথমেই লাগবে নমিনির স্ব-ব্যাখ্যায়িত একটি আবেদন। এ ছাড়া মূল গ্রাহকের মৃত্যুসনদের সত্যায়িত অনুলিপি, গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি, নমিনির ব্যাংক হিসাবের তথ্য ও মুঠোফোন নম্বর এবং যে প্রতিষ্ঠান থেকে সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা হয়েছে, সে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের একটি সুপারিশপত্র। সঞ্চয়পত্র বিধিমালা অনুযায়ী ইস্যু কর্মকর্তা যেহেতু নগদায়ন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত, ফলে এ ব্যাপারে কর্মসূচি অফিসের ভূমিকা কী, তা অধিদপ্তরের কাছে স্পষ্ট নয় বলে জানানো হয়েছে।

সঞ্চয় অধিদপ্তর বলেছে, ১৯৭৭ সালের সঞ্চয়পত্র বিধি অনুযায়ী নমিনির অনুকূলে সঞ্চয়পত্র স্থানান্তর অথবা নগদায়ন করতে হবে।

যৌথ নামে কেনা সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে নমিনি বা নমিনিরা অনাপত্তি দিলে অন্যদের নামে সঞ্চয়পত্রের মালিকানা স্থানান্তর করা যাবে।

তবে নমিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে কীভাবে বিবেচনা করা হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। বলা হয়েছে, সঞ্চয় অধিদপ্তর সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তা ঠিক করবে।

নমিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে অভিভাবকত্ব সনদ নিতে হবে আদালত থেকে। পরে ইস্যু অফিসে তা দাখিল করতে হবে। সে ক্ষেত্রে নগদায়ন হবে আদালতের নিয়োগ করা অভিভাবকের অনুকূলে।

নমিনি না থাকলে

সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক যদি নমিনি ঠিক না করে থাকেন বা গ্রাহকের আগে নমিনি মারা যান, তাহলে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অধিদপ্তর বলেছে, অধিদপ্তরসহ অন্য পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে নমিনি না থাকলে তথ্য ও কাগজ লাগবে আট ধরনের। প্রথমেই নিতে হবে আদালত থেকে উত্তরাধিকার সনদ (সাকসেশন সার্টিফিকেট)। উত্তরাধিকারীদের পক্ষ থেকে বিশদ বিবরণসহ ইস্যু কর্মকর্তার কাছে সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে।

চিকিৎসক এবং স্থানীয় সরকারের (ইউনিয়ন, পৌরসভা, কাউন্সিলর কার্যালয়) কাছ থেকে গ্রাহকের মৃত্যুসনদ বা মৃত্যু নিবন্ধন নিতে হবে। লাগবে উত্তরাধিকারীর নাগরিক সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। উত্তরাধিকারী সবার দুই কপি করে পাসপোর্ট আকারের ছবিও লাগবে।

লাগবে উত্তরাধিকারীর স্বাক্ষর সত্যায়িত সনদ এবং যথাযথভাবে পূরণ করা তদন্ত ফরম। উত্তরাধিকারী অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে পারিবারিক আদালত থেকে নিতে হবে অভিভাবকত্বের সনদ।