ইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবেউল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেই
No icon

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস ওপেকের

চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস বাড়িয়েছে রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আগামী বছরের চাহিদা নিয়ে আশাবাদী জোটটি। কারণ চীন ও ভারত অব্যাহত জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে দৈনিক ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাও আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে সংস্থাটির পূর্বাভাসের তুলনায় ওপেক প্লাসের পূর্বাভাস দ্বিগুণ বেশি। জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে ওপেক ও এর মিত্র জোট ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও বাজারকে চাঙ্গা করে তুলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে জোটটি গত জুন থেকে আরো ব্যাপক মাত্রায় উত্তোলন কমার পদক্ষেপ হাতে নেয়। ওপেকের প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, জোটটির আগাম পদক্ষেপ এবং উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাজারে স্থিতি ফিরিয়েছে। আগামী বছর পর্যন্ত এ স্থিতিশীল অবস্থা বজায় থাকবে। ২০২৪ সালে চীনের অর্থনীতিতে গতি ফিরবে। ফলে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি আসবে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। বিষয়টি জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তা করবে।

ওপেকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসতে পারে। চলতি বছর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ২ দশমিক ৬ শতাংশে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এবং আগামী বছর সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার শিথিল হয়ে আসবে। অন্যদিকে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সুদহারও আকাশচুম্বী হয়ে উঠবে বলে মনে করছে ওপেক। জোটসংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী বছর ওপেকের বাইরের দেশগুলো যে হারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে, তার চেয়েও বেশি মাত্রায় বাড়বে চাহিদা। ওপেকের বাইরের দেশগুলোর সরবরাহ দাঁড়াতে পারে দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেলে।

ওপেকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছর জোটটির সদস্য দেশগুলো থেকে বিশ্বের দৈনিক ৩ কোটি ২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল প্রয়োজন হবে, যা চলতি বছরের তুলনায় আট লাখ ব্যারেল বেশি। তবে বর্তমানে সে তুলনায় অনেক কম জ্বালানি তেল উত্তোলন করছে ওপেক। ওপেকের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন গত মাসে কমেছে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী সৌদি আরবসহ সদস্য দেশগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় এমনটি ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যান্য দেশের উত্তোলন কমলেও ইরাক ও নাইজেরিয়ার উত্তোলন বেড়েছে। দেশ দুটির উত্তোলন না বাড়লে জোটের সার্বিক উত্তোলন আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার আশঙ্কায় কয়েক মাস ধরেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমাচ্ছে রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। তার ওপর কিছু দেশ জোটের সঙ্গে চুক্তির বাইরে এককভাবেও উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য বাজার নিয়ন্ত্রণ। এক সমীক্ষায় রয়টার্স জানায়, ওপেকের সদস্য দেশগুলো গত মাসে দৈনিক ২ কোটি ৮১ লাখ ৮০ ‍হাজার ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে। মে মাসের তুলনায় দৈনিক উত্তোলন কমেছে ৫০ হাজার ব্যারেল করে। এছাড়া মে মাসে উত্তোলন দৈনিক ২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে কমেছিল।

ওপেক ও ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলো গত বছরের শেষ দিক থেকেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর নীতি অনুসরণ করে আসছে। চলতি বছরের এপ্রিলে রাশিয়াসহ কিছু সদস্য দেশ এককভাবে উত্তোলন আরো কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মে মাসে ওপেকের ছয় সদস্য দেশ দৈনিক উত্তোলন আরো ১০ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। জুন পর্যন্ত উত্তোলন কমানোর এ সিদ্ধান্ত বহাল ছিল।