আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের ছোট-বড় প্রায় সব রাজনৈতিক দল মাঠে নেমেছে। রাজনৈতিক নেতারা সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব কর্মসূচির আড়ালে কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা দল জানমালের ক্ষতি করতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহে অর্থ সরবরাহ করছে কি না, তা চিহ্নিত করতে সরকার সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে সম্পদশালী শতাধিক ব্যক্তির রিটার্নে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে আয়-ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব মিলিয়ে দেখছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।চলতি করবর্ষে এসব রিটার্ন জমা দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আয়ের এসব ব্যক্তির নিট আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে নিয়মিত আয়কর প্রদানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে অনেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কম কর দিয়েছেন বা সম্পদের তথ্য গোপন করে একেবারেই কর দেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।সঠিক হিসাবে নিয়মিত রাজস্ব আদায়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে এনবিআর। প্রাথমিকভাবে কারও রিটার্ন খতিয়ে দেখে আয়-ব্যয়ের হিসাবে গরমিল পাওয়া গেলে আরও বিস্তারিত তদন্তে নামছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ক্ষেত্রে ধনী ব্যক্তির নথি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক সভায় বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কোনো ধরনের নাশকতা করা যাবে না। এসব কাজে অর্থদাতাদের সন্ধান করা হচ্ছে। কোনো সম্পদশালী ব্যক্তির আয়-ব্যয়ে বড় ধরনের গরমিল থাকলে বা রিটার্নে স্পষ্ট তথ্য না থাকলে ওই ব্যক্তি নাশকতা সৃষ্টিতে অর্থ সরবরাহ করছেন কি না বা কোনো অসাধু কাজে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে এনবিআর থেকে সংশ্লিষ্ট অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে।বিভিন্ন কর অঞ্চল থেকে ধাপে ধাপে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া বেশি আয়ের সম্পদশালী ব্যক্তিদের রিটার্ন খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে রিটার্নে তথ্যের গরমিল পাওয়া যাওয়ায় শতাধিক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে এবং নগদে কী পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে, বিদেশ থেকে অর্থ পেয়েছেন কি না, কোন কোন দেশ থেকে, কী খাতে, কে বা কারা অর্থ পাঠিয়েছে তাও দেখা হবে। এসব ব্যক্তি দেশে ও বিদেশে কাকে কোন খাতে অর্থ দিয়েছেন। আয়-ব্যয় অনুযায়ী রাজস্ব পরিশোধ করেছেন কি না, এসব ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তান, পরিচিতজনদের রিটার্নের তথ্যও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।শতাধিক ব্যক্তির মধ্যে প্রায় সবাই আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করেন বলে রিটার্নে উল্লেখ করেছেন। এসব ব্যক্তির মধ্যে অনেকে তৈরি পোশাক খাত ও এর সহযোগী শিল্পের ব্যবসায়ী, আবাসন খাতের ব্যবসায়ী, অলংকার ব্যবসায়ী, সিরামিক ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, বাড়িভাড়ার ব্যবসা করেন। এসব ব্যবসায়ীর বেশির ভাগই রাজধানীতে এবং বাকিরা বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে বসবাস করেন।