জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, বর্তমানে অর্থনীতির গতি কম। এর সঙ্গে নির্বাচনের বছরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
করদাতাদের করসেবা দিতে কাল ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী আয়কর তথ্যসেবা মাস। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এনবিআর। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এটা নির্বাচনের বছর। নির্বাচনের বছরে ডলারেরও সংকট চলছে। আমদানি কমে গেছে; ব্যবসার গতি কমে গেছে। ফলে এমন পরিস্থিতিতে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে রাজস্ব আয় করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে দেশে এখন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারে।
১ নভেম্বর থেকে করসেবা মাস শুরু, করদাতাদের করসেবা দিতে আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে মাসব্যাপী আয়কর তথ্যসেবা মাস। এনবিআরের প্রতিটি কর সার্কেল ও আঞ্চলিক কার্যালয়ে এই সেবা দেওয়া হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, গত কয়েক বছরের মতো এবারও আয়কর মেলা হবে না। তবে নভেম্বর মাসজুড়ে দেশের প্রতিটি কর অঞ্চলে মেলার আদলে সেবা দেওয়া হবে। করদাতারা নিজেদের কর অঞ্চলে গিয়ে বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এ ছাড়া ই-পেমেন্টের মাধ্যমে করদাতারা আয়কর পরিশোধ করতে পারবেন। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতিবছর সারা দেশে কর মেলার আয়োজন করা হতো; কিন্তু করোনা শুরুর পর জনসমাগমে বিধিনিষেধ থাকায় তা বন্ধ হয়ে যায়। আইন অনুযায়ী, আগামী ৩০ নভেম্বর ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন জমার শেষ দিন। এর মধ্যে সব কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীকে (টিআইএন) রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, কাল বুধবার থেকে প্রতিটি কর অঞ্চলে রিটার্ন জমার যাবতীয় করসেবা পাবেন করদাতারা। দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেল কার্যালয়ে করসেবা দেওয়া হবে। সেখানে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণেও সহায়তা করা হবে করদাতাদের। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে করদাতারা তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্ন জমার প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পাবেন। এ ছাড়া ই-রিটার্ন জমা দিতে আগ্রহী করদাতাদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। কেউ যদি ই-টিআইএন নিতে চান, তা-ও নিতে পারবেন। এ ছাড়া নতুন আয়কর সম্পর্কে যেকোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য থাকবে তথ্যকেন্দ্র। এভাবেই কর মেলার পরিবর্তে মেলার আদলে কর তথ্যসেবা মাস চালু করেছে এনবিআর।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সচিবালয়, অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরিকল্পনা কমিশন ও ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে বুথ বসিয়ে আয়কর সেবা দেওয়া হবে।
আগামী ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করবে এনবিআর। এবারের আয়কর দিবসের প্রতিপাদ্য—কর দেব গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ। স্লোগান ঠিক করা হয়েছে এমন—আমরা বদলে যাব, আমরা বদলে দেব।