করোনাভাইরাসহ যেকোনো মহামারী বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সময়মতো আয়কর দিতে না পারলে করদাতাকে বাড়তি জরিমানা বা সুদ পরিশোধ করতে হবে না। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে কর না দেয়ার কারণে করদাতাকে বাড়তি অর্থ আদায় করতে হবে না। এমনকি কর আদায় না করায় রাজস্বহানির জন্য আয়কর কর্তৃপক্ষকেও দায় নিতে হবে না। এমন বিধান রেখে ইনকাম ট্যাক্স (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার (৭ মে) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে বিটিভির ক্যামেরায় রেকর্ড করা প্রেস ব্রিফিংয়ের এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর যেসব ধারার বিধান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিপালন করতে হবে, সেসব ধারার বিধান পূরণে ওই সময় পরিগণনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ধারা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মহামারিজনিত বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত সময় বাদ দিতে বা পরিমার্জন করতে বা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরিপালনের জন্য সময় বর্ধিত করতে পারবে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন আইন মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে এটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করবে। পার্লামেন্ট বসার প্রথম দিনই এটি সেখানে উপস্থাপিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনে নতুন একটি ধারা (১৮৪ জি) যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সময় গণনার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদনক্রমে সবাইকে একটা এক্সাম্পশন (অব্যাহতি) দিতে হবে। যদি এক্সাম্পশন না দিত, তবে জরিমানা এবং সুদারোপের বিধান ছিল। এজন্য এই আইনটা নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষিত হওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে এই পর্যন্ত অদ্যাবধি আয়কর বিভাগের সকল দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ইতিমধ্যে করদাতারা এবং আয়কর কর্তৃপক্ষও ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের কতিপয় ধারার বিধান অনুযায়ী কার্যক্রম পরিপালন ও গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থতার কারণে করদাতাদের ওপর জরিমানা ও সুদ আরোপের এবং আয়কর কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে সময় অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে রাজস্বহানির দায় আরোপের আইনগত সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সচিব বলেন, এই জরিমানা ও সুদ এবং দায় আরোপের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কোনো ধরনের ব্যক্তিগত সংশ্লেষ বা অবহেলা না থাকায় শুধু উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই ধরনের আইনগত দায় সৃষ্টি হওয়ায় তা মওকুফের জন্য করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন এপিডেমিক, পেনডেমিক, ওয়ার অ্যান্ড অ্যানি আদার অ্যাক্ট অব গড উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪-তে একটি নতুন ধারা ১৮৪জি সংযোজন করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে একই সভায় ভিডিও কনফারেন্সিং ও অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার বিধান রেখে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।