আগামী ৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবার বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য রাখা হচ্ছে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ। বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এরই মধ্যে সোয়া ২ লাখ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন বাজেটে বাজেটের ৮ শতাংশ থাকছে ভর্তুকি ও প্রণোদনায়,কৃষি, খাদ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রায় ৪৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা থাকছে। এটি সম্ভাব্য বাজেটের ৮ শতাংশের বেশি। বরাদ্দের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি যাচ্ছে কৃষি খাতে। রেমিট্যান্স খাতেও থাকছে প্রণোদনা। চলতি অর্থবছর রেমিট্যান্স প্ররণে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার সুফল মিলেছে। জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ২২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। করোনা পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে এমন ধারণা থেকে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে বলে জানা যায়।
রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ চলতি বছর ৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যার মোট আর্থিক পরিমাণ ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। এসব প্রণোদনা ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ। যার অর্ধেক গ্রাহক ও বাকিটা সরকার ভর্তুকি আকারে দিচ্ছে। এসব প্রণোদনায় সুদ পরিশোধে ভর্তুকি বাবদ আগামী বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ২ হাজার কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে অধিক খাদ্য উত্পাদনের লক্ষ্যে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে দেশে। গত বছরের মতো এবারও কড়াকড়ি আরোপ করতে হয়েছে। ফলে অর্থনীতির কতটা ক্ষতি হয়েছে সেটি হিসাব করা হচ্ছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য খাতসহ কৃষি এবং সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় বেড়েছে। সেজন্য আগামী বাজেটেও করোনার প্রভাব মোকাবিলায় প্রাধান্য থাকছে স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সামাজিক নিরাপত্তায়।
আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছর কৃষি খাতে সাড়ে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, বিদ্যুত্ খাতে ৯ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানি খাতে ৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এছাড়া খাদ্যে ৬ হাজার কোটি, রেমিট্যান্সে ৪ হাজার কোটি, প্রণোদনা প্যাকেজ ঋণের সুদ পরিশোধে ২ হাজার কোটি ভর্তুকি দেওয়া হতে পারে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা মিলিয়ে ৪৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।