করপোরেট কর হ্রাস, শুল্কহার পুনর্বিন্যাস, উৎসে কর ও আগাম কর বিলোপ এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সুপারিশ।কোভিডের কারণে একদিকে আয় কমেছে, অন্যদিকে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। দুটি মিলিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আর সার্বিকভাবে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে। বর্তমানে দেশে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা। সে জন্য ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা ১ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
পাশাপাশি আয়করের হারও পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের প্রস্তাবিত করহার হলো প্রথম ৪ লাখ টাকার জন্য করহার শূন্য রাখা। এর পরের ৩ লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, তার পরের ৪ লাখ টাকায় ১০ শতাংশ, পরের ৫ লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ, পরের ৬ লাখ টাকায় ২০ শতাংশ এবং অবশিষ্ট টাকার ওপর ২৫ শতাংশ কর আরোপ। এ ছাড়া ঢাকাসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য এলাকার জন্য ন্যূনতম কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যেমন, ন্যূনতম কর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জন্য ৩ হাজার টাকা, বিভিন্ন সিটির জন্য আড়াই হাজার টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২ হাজার টাকা করা
আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত পরামর্শক সভায় এসব প্রস্তাব পরামর্শ উঠে আসে। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা নিজেদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন।
সভায় করপোরেট কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে এফবিসিসিআই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করার দাবি জানায়। তাদের যুক্তি হলো প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে করপোরেট করহার নির্ধারণ করা উচিত।
ব্যবসায়ীদের যত দাবি
সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো রপ্তানিসহ সব শিল্প খাতে উৎসে কর ও আগাম কর ফেরত দেওয়ার পরিবর্তে বিলোপ করা। সেই সঙ্গে শুল্কহার পুনর্বিন্যাস করে তৈরি পণ্যে ২৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত হয় এমন যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী কাঁচামালে ৭ থেকে ১০ শতাংশ, মৌলিক ও দেশে উৎপাদিত হয় না এমন মধ্যবর্তী কাঁচামালে ১ থেকে ৩ শতাংশ এবং শিল্প খাতের যন্ত্রপাতি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া চাল, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, বুট, ডাল, লবণ, ভোজ্যতেল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ পর্যায়ে যে ২ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হয়, তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে এফবিসিসিআই।