TAXNEWSBD
অনলাইন বিক্রেতাদের আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক
রবিবার, ১৯ জুন ২০২২ ০২:১১ পূর্বাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

করযোগ্য আয় থাকুক না থাকুক, ব্যাংক কারো ১০ লাখ টাকা থাকলেই তার রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।কিংবা কখনো ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন কিন্ত এখন আর ব্যবসা বাণিজ্যে নেই, তাকেও রিটার্ন জমা দিতে হবে।

রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতার অধীনে যারা:

৫ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ নিতে হলে

ক্রেডিট কার্ড থাকলে

উবার, পাঠাও চালকদের

বাসা বাড়িতে গ্যাস কানেকশন পেতে হলে

৫ লাখ টাকার উপরে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে

ব্যাংকে ১০ লাখ টাকার উপরে বিনিয়োগ থাকলে

সন্তান ইংলিশ ভার্শন স্কুলে পড়লে

অভিভাবককে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স রিটার্নের প্রমাণ ঝুলিয়ে রাখতে হবে, যা আইনে স্বীকৃত তার গোপনীয়তা ক্ষুন্ন করবে

ফাতেমা জেরিন নামে রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকার একজন গৃহিণী ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইনে কিছু পোশাক আইটেম ও ব্যাগ বিক্রি করেন। সারাবছরে তার বিক্রি দুই লাখ টাকারও কম। তার মতো এ ধরনের প্রায় তিন লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাকে এখন থেকে সরকারের কাছে আয়করের হিসাব বা ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।

সরকার প্রস্তাবিত বাজেটের ফাইন্যান্স বিলে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য ও সেবা বিক্রি করা সবার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ক্রেডিট কার্ড থাকলে, পাঁচ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে, উবার-পাঠাও চালক, বাসা বাড়িতে গ্যাস কানেকশন পেতে হলে, সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকার উপরে বিনিয়োগ থাকলে আয়কর অফিসে আয়-ব্যয়ের হিসাব তথা ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।

করযোগ্য আয় থাকুক না থাকুক,

ব্যাংক কারো ১০ লাখ টাকা থাকলেই তার রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

কিংবা কখনো ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন কিন্ত এখন আর ব্যবসা বাণিজ্যে নেই, তাকেও রিটার্ন জমা দিতে হবে।

ট্যাক্স এর আওতা ও আদায় বাড়াতে বিস্তর পদক্ষেপ এসেছে এবারের বাজেট প্রস্তাবে, যা কর আদায় বাড়াতে ভুমিকা রাখার পাশাপাশি অনেক স্বল্প আয়ের কিংবা করযোগ্য আয় নেই, এমন মানুষের উপরও বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয়কর আইনে স্বীকৃত করদাতার গোপনীয়তাও রক্ষা করা যাবে না। যেমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এতদিন তাদের ব্যবসা প্রাঙ্গণে টিআইএন রাখার নিয়ম থাকলেও নতুন করে তাদের এখন ট্যাক্স পরিশোধের প্রমাণপত্র প্রদর্শনযোগ্য স্থানে রাখতে হবে, যা একজন করদাতার আইন দ্বারা স্বীকৃত এ সংক্রান্ত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ করবে।বর্তমানে ৩৭ ধরনের ইকোনমিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ই-টিআইএন) বাধ্যতামূলক, যাদের মধ্যে কিছু খাতকে রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছিলো। নতুন প্রস্তাবে তাদের প্রায় সবাইকে রিটার্ন জমার আওতায় আনা হয়েছে। যার মধ্যে নতুন করে একাধিক খাত ও উপখাত যুক্ত হয়েছে।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত ট্যাক্স কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা এবং গ্রে ইকোনমিকে ফরমাল ইকোনমিকে আনার অংশ হিসেবে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদের ট্যাক্স দিতে হবে না। কিন্তু হিসাব নিকাশ সরকারের কাছে থাকা উচিত।

অনলাইনে পন্য ও সেবা বিক্রি করা উদ্যোগের মত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও করযোগ্য আয় নেই এমন মানুষের উপর ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ হলে এ ধরণের উদ্যোগ ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।বিডিজবস ও আজকেরডিল এর প্রধান এ কে এম ফাহিম মাশরুর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, নতুন সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের রাজস্ব তেমন বাড়বে না। কিন্তু এর ফলে এ খাতের প্রসার ক্ষতিগ্রস্ত হবে কর্মসংস্থানের উদ্যোগও ব্যাহত হবে।তিনি জানান, এ খাতে বর্তমানে ৩ লাখ উদ্যোক্তা জড়িত, যার অর্ধেকই নারী। এর সঙ্গে পরোক্ষভাবে আরো ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।