চলতি অর্থবছরে মাঠপর্যায়ের ভ্যাট ও শুল্ক খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আলাদা কর্মপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি শুল্ক ও ভ্যাট খাতের কমিশনারেটকে চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আলাদা কর্মপরিকল্পনা তৈরির কথা বলা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের ভ্যাট ও শুল্ক খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজস্ব আদায় কৌশল নিয়ে বৈঠক করেন এনবিআরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সেগুনবাগিচার এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এতে বিভিন্ন কমিশনারেটের কমিশনাররা অংশ নেন। তবে বৈঠকে রাজস্ব কর্মকর্তাদের বাইরে আর কেউ ছিলেন না। বৈঠকে অংশ নেওয়া বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বৈঠকের বিষয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআরকে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের সাময়িক হিসাবে বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০০ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় হয়েছে। চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ে প্রায় ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে হবে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে শুল্ক-কর আদায়ে বেশি মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের অর্থনীতিবিদেরা। বর্তমানে বিশ্বে কর-জিডিপি অনুপাতের (১০ শতাংশের নিচে) দিক থেকে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ।
গতকালের বৈঠকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জানান, বৈশ্বিক পরিস্থিতি খারাপ থাকলেও দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থায় আছে। দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভালো। অর্থনীতিতে গতি আছে। তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে বৈঠকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কিছু কৌশল অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে শুল্ক-কর বকেয়া রাখে কিংবা ফাঁকি দেয়, তাদের কাছ থেকে কর আদায় করতে হবে। আবার যারা নিয়মিত শুল্ক-কর দেয়, তাদের সঙ্গে আরও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আদায় বাড়াতে হবে। এ ছাড়া অর্থবছরের শুরু থেকেই শুল্ক-কর আদায়ে নজর দিতে হবে। বছরের শুরু থেকেই রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বলা হয় কর্মকর্তাদের। বাজেটে ভ্যাট ও শুল্ক খাতে যেসব পরিবর্তন হয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে শুল্ক-কর বাড়ানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এ ছাড়া সৃজনশীল উপায়ে রাজস্ব আদায়ের নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে বকেয়া কর আদায়ে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আনা ঠেকাতে কঠোর উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।