আগামী ৩০ নভেম্বর ২০২২ ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার শেষ তারিখ। এ সময়ের মধ্যে করদাতারা ২০২২-২৩ করবর্ষে ২০২১-২২ আয়বর্ষের হিসাব জমা দেবেন। অর্থাৎ ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে। চলতি কর বছরের আগে যাঁরা টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) নিয়েছেন, কিন্তু কোনো কারণে রিটার্ন দেননি, তাঁরাও জরিমানা ছাড়া ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে রিটার্ন দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে চলতি বছরের রিটার্ন সর্বজনীন পদ্ধতিতে এবং অন্য বছরগুলো সাধারণ পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।এ বছর ৩০ জুনের আগে যাঁরা টিআইএন গ্রহণ করেছেন, তাঁদেরও আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। গত বছর ৭৫ লাখের বেশি টিআইএনধারী করদাতার মধ্যে ২৫ থেকে ২৬ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। আয়কর রিটার্ন একজন করদাতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাই আয়কর রিটার্ন ত্রুটিপূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট করদাতাকে নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হতে পারে।
আমরা জমি, ফ্ল্যাট, স্থায়ী আমানত বা এফডিআর, সঞ্চয়পত্র, ইত্যাদির দলিল বা নথি যেভাবে সংরক্ষণ করি, অনেকে আয়কর রিটার্ন সেভাবে সংরক্ষণ করেন না। আয়কর রিটার্ন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা কর ব্যবস্থাপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আবার অনেকের পক্ষেই আয়কর অধ্যাদেশ, প্রজ্ঞাপন, অর্থ আইন, আয়কর পরিপত্র বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা খুবই কঠিন। আয়কর আইন প্রতিবছর সংশোধন ও পরিমার্জন হয়। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা, যাঁরা চাকরিজীবী বা ছোটখাটো ব্যবসা করেন, তাঁদের জন্য খুব একটা অসুবিধা হয় না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই একটু সচেতন হতে হবে।
এ বছর ৩০ জুনের আগে যাঁরা টিআইএন নিয়েছেন, তাঁদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। আবার এ বছর ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁদের মোট পরিসম্পদ ৪০ লাখ টাকার নিচে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তাঁরা এক পাতার ফরম পূরণ করে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
১. গত বছরের রিটার্নের ফটোকপি সঙ্গে রাখুন।
২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের একটি তালিকা তৈরি করুন।
৩. প্রয়োজনীয় কাগজগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন তা নির্দিষ্ট সময়ের কি না। কাগজগুলো ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের হতে হবে।
৪. রিটার্নের একটি ফটোকপি করুন এবং গত বছরের রিটার্ন দেখে খসড়া রিটার্ন তৈরি করুন।
৫. প্রতিটি কাগজের দুটি করে কপি করুন।
৬. স্বাক্ষর করার আগে কমপক্ষে দুবার চেক করুন।
৭. যাঁরা নিজে রিটার্ন পূরণ না করে অন্যদের ওপর নির্ভরশীল, তাঁরা সুপ্রশিক্ষিত এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছাড়া কোনোমতেই খালি বা সাদা রিটার্নে স্বাক্ষর করবেন না।
৮. স্বাক্ষর করার আগে গত বছরের সম্পদগুলো যথাযথভাবে যাচাই করুন এবং এ বছরে নতুন কোনো সম্পদ থাকলে তা ভালোভাবে পরীক্ষা করুন।
৯. মনে রাখবেন, আয়নার সামনে দাঁড়ালে আপনার চেহারা যেমন দেখা যাবে, তেমনি রিটার্নে আপনার সম্পদ ও আয়-ব্যয়ের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে হবে।
১০. স্বাক্ষর করার পর একটি সেট আপনার ট্যাক্স ফাইলে সংরক্ষণ করুন।
১১. রিটার্ন জমা হওয়ার পর রিটার্ন জমা দেওয়ার স্লিপ সংগ্রহ করুন।