ভ্যাট থেকে চলতি অর্থবছর ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করতে পেরেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে এবার আরো ১৪ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা বেশি আয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। এর পরও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে অতিরিক্ত আয় করতে হবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এ অর্থ আদায়ে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
ডলার সংকট কাটাতে আইএমএফের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা নিচ্ছে সরকার। এ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে সংস্থাটির একটি রিভিউ মিশন বাংলাদেশ সফর করছে। প্রতিনিধি দলটি সম্প্রতি এনবিআরের ভ্যাট, আয়কর ও শুল্কনীতি সদস্য ও তাদের দলের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
অতিরিক্ত অর্থ আয়ে যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সিগারেটের ভ্যাট কাঠামো পুনর্গঠন; মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার ও এলপিজি সিলিন্ডারের ভ্যাট অব্যাহতি ও আংশিক অব্যাহতি তুলে নেয়া এবং ইএফডি বা এসডিসি মেশিন থেকে কাঙ্ক্ষিত ভ্যাট আদায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে সূত্রে জানা যায়, সিগারেটের ভ্যাট আদায় পুনর্ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বাড়তে পারে। চলতি অর্থবছর (২০২৩-২৪) সিগারেট খাত থেকে মোট ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব। একই সঙ্গে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হবে মোবাইল ফোন, পলিপ্রপাইলিন ১১ স্টাপল ফাইবার, বল পয়েন্ট কলম, সফটওয়্যার এবং এলপিজি সিলিন্ডারের ভ্যাট অব্যাহতি বা আংশিক অব্যাহতি প্রত্যাহার করার মাধ্যমে। এছাড়া সিগারেট, জর্দা ও গুল, প্লাস্টিক পণ্য, অ্যালুমিনিয়াম পণ্য এবং সানগ্লাসে করবৃদ্ধি ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে সহায়তা করবে।
ইএফডি বা এসডিসি ডিভাইস বসানো ও তদারকির মাধ্যমে অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে বলে আইএমএফ প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর আরো জানায়, ভ্যাট রাজস্বের ৪০ শতাংশ আসে উৎপাদন খাত থেকে। উৎপাদন খাত নির্ভর করে আমদানির ওপর। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানির চিত্র নেতিবাচক হওয়ায় ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয় কম হতে পারে। ডলার সংকট, কাঁচামাল আমদানি, ভোগ্যপণ্য আমদানি ও জ্বালানি সরবরাহ ঠিক না থাকলে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয়ে বড় প্রভাব পড়বে।