TAXNEWSBD
বাড়তি শুল্ক-কর আদায় প্রক্রিয়া জানতে চায় আইএমএফ
বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫১ অপরাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পেতে সংস্থাটির শর্তানুসারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক-কর আদায় করতে হবে। বাংলাদেশে সফররত আইএমএফ মিশন এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে তাদের শর্ত অনুযায়ী কীভাবে বাড়তি শুল্ক-কর আদায় হবে, সেই পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে। সিরিজ বৈঠকে এনবিআরের শুল্ক, কর ও ভ্যাট বিভাগ আলাদা আলাদাভাবে বাড়তি শুল্ক-কর আদায়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে আয়কর ও ভ্যাট বিভাগের পরিকল্পনায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও কাস্টমস বিভাগের পরিকল্পনায় আপত্তি ঋণদাতা সংস্থাটির। গতকাল মঙ্গলবার এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এ বিষয় উঠে এসেছে।  চলতি অর্থবছরে অতিরিক্ত ২৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা আয়কর খাতে, ৩ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা ভ্যাট খাত থেকে ও ১১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কাস্টমস খাত থেকে বাড়তি আদায় করতে হবে। এই টাকা কর-জিডিপি অনুপাতের শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।

শুল্ক বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পেট্রোবাংলার কাছ থেকে বকেয়া ৮ হাজার ৮০২ কোটি টাকা আদায়ের ব্যবস্থা, আমদানি পর্যায়ে শুল্কহার পরিবর্তনের ফলে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য পদক্ষেপের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা আদায় করা হবে। বাড়তি এই আদায় কর-জিডিপি অনুপাতের শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ।তবে পেট্রোবাংলার কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায়ের পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলছে, সরকারের অন্য একটি সংস্থার কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় অদূরদর্শী পদক্ষেপ। এ অর্থবছর টাকা আদায় করতে পারলে পরের অর্থবছরে বকেয়া থাকবে না। তখন অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় কোথা থেকে আসবে? এ ছাড়া অন্যান্য পদক্ষেপের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা আদায়ের রূপরেখাকে বাস্তবসম্মত মনে করছে না আইএমএফ।আয়কর বিভাগ জানিয়েছে, ভূমি রেজিস্ট্রেশন থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা, ভ্রমণ কর থেকে ৫০০ কোটি টাকা, টোব্যাকো কর থেকে ৩০০ কোটি টাকা, পরিবেশ সারচার্জ থেকে ৫০০ কোটি টাকা, করের পরিধি বৃদ্ধির মাধ্যমে ২৫০ কোটি টাকা, কার্বোনেটেড বেভারেজ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা ও বকেয়া কর আদায়ের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা আদায় করা হবে।

ভ্যাট বিভাগ জানিয়েছে, সিগারেটের করহার বৃদ্ধির মাধ্যমে আসবে ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা, মোবাইল ফোন, পলিপ্রোপাইলেন স্ট্যাপল ফাইবার, বল পয়েন্ট কলম, সফটওয়্যার, এলপিজির অব্যাহতি উঠিয়ে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ও ইএফডি মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা বাড়তি আদায় করা হবে।আইএমএফ চলতি অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলেছে। পরের দুই বছরে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলেছে। এই তিন অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ১ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়াতে হলে এনবিআরকে অতিরিক্ত ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে, যা এনবিআরের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ।