অনাবাসী করদাতাদের ওপর করহার কমিয়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বর্তমানে অনাবাসীদের আয় দেশের বাইরে নেওয়ার সময় ৩০ শতাংশ হারে উৎসে আয়কর কেটে রাখা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রাক্–বাজেট আলোচনায় বিডার পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব করা হয়। ঢাকার আগারগাঁওয়ের এনবিআর সম্মেলনকক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বিডার মহাপরিচালক গাজী এ কে ফজলুল হক বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন। সভায় এনবিআরের চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করেন। বিডার পক্ষ থেকে বলা হয়, অনাবাসী করদাতাদের উৎসে করের ভার নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হয়। ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক খরচ বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ছে।
বিডার পক্ষ থেকে আরও প্রস্তাব করা হয়, রয়্যালটি, কারিগরি সেবা মাশুল ও কারিগরি জ্ঞানের মাশুলসহ অন্যান্য খরচকে প্রকৃত ব্যবসায়িক খরচ বিবেচনা করে পুরোটাই অনুমোদিত ব্যয় হিসেবে গণ্য করা হোক। বর্তমানে মুনাফার ১০ শতাংশ পর্যন্ত এই খরচ দেখানো যায়। এ ছাড়া দ্বৈত কর পরিহারের জন্য ট্যাক্স রেসিডেন্সি সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। বিডার ভ্যাট–সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে আগাম কর প্রত্যাহার এবং অন্যান্য পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ আগাম কর আরোপ, যা বর্তমানে ৫ শতাংশ।
এদিকে কর অব্যাহতি সুবিধা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য ও সেবা আমদানির সময় অগ্রিম কর না কাটার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কর অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। যুক্তি হিসেবে সংস্থাটি বলছে, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর প্রথম তিন বছর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা পায়। এরপর ১০ বছর পর্যন্ত ২০ থেকে ৮০ শতাংশ কর অব্যাহতি সুবিধা মেলে। তাই অগ্রিম কর আরোপ করা সমীচীন হবে না। বেজার পক্ষে সংস্থাটির নির্বাহী সদস্য মজিবুর রহমান বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানিয়েছেন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম। তিনি বলেন, কর দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে পারলে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সহজ হবে। বর্তমানে বেপজায় ৩৮টি দেশের ৪০০ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
দেশের আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) ৪৪৯টি শিল্প ইউনিটের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় ছয়টি সোলার বা সৌরপণ্য আমদানি করতে চায় বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, ৪৩ সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা আছে। এই তালিকা পুনর্বিবেচনা করা উচিত। কারণ, এখানে শিক্ষা, গ্যাস-বিদ্যুতের মতো মৌলিক পরিষেবাগুলোও আছে। এ ছাড়া রপ্তানিকারকদের জন্য কাঁচামালের শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা সহজ করা এবং এনবিআরের অটোমেশনসহ একাধিক প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।এনবিআর চেয়ারম্যান প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন।