মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা নিম্নআয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি এবং নিত্যপণ্যে শুল্ক না বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের স্বার্থে শর্তসাপেক্ষে করপোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। এতে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়, আগের মতো উৎপাদনশীল খাতের সঙ্গে জড়িত পুঁজিবাজারে তালিকাবহির্ভূত শিল্পের কর কমানো হচ্ছে। এ ছাড়া সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা বাতিলের পক্ষে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে আগামী অর্থবছরে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে বাজেটবিষয়ক সভায় বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অনুবিভাগের বাজেট বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এতে অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআরের তিন অনুবিভাগের নীতি শাখার সদস্য, প্রথম সচিব, দ্বিতীয় সচিব ও বাজেট সমন্বয়কারী দল উপস্থিত ছিলেন। বাজেটে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিসহ করদাতাদের হয়রানি কমাতে আগামী বাজেটে ব্যক্তি ও কোম্পানি সব শ্রেণির করদাতাকে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এ পদ্ধতিতে রিটার্ন অ্যাসেসমেন্ট করা হয় না। বর্তমানে ব্যক্তি করদাতাদের স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দিতে হয়। অন্যদিকে কোম্পানি করদাতারা স্বনির্ধারণী ও সাধারণ-দুই নিয়মেই রিটার্ন জমা দিতে পারেন। সাধারণ নিয়মে জমা দেওয়া রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে চূড়ান্ত কর আদায় করা হয়। আর স্বনির্ধারণী পদ্ধতির রিটার্ন অডিট করা হয়। এ জন্য বাজেটে আয়কর আইনে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এনবিআর।অভিন্ন হারের মতো ভ্যাট অব্যাহতিও ধাপে ধাপে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা এনবিআরের। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার ভ্যাটের আদর্শ হার ১৫ শতাংশ কার্যকর করার দিকে এগোচ্ছে। তবে আগামী অর্থবছরেই সবক্ষেত্রে এর বাস্তবায়ন হবে না। এর বাস্তবায়ন ধাপে ধাপে হবে।বর্তমানে বিভিন্ন পণ্য ও সেবাভেদে ৩, ৫, সাড়ে ৭, ১০ ও ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে সব ধরনের পণ্য ও সেবার বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দিয়েছিল এনবিআর। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব পণ্য ও সেবার বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ না করে কিছু পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের নির্দেশনা দিয়েছেন।