TAXNEWSBD
মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে
শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪ ২৩:১৬ অপরাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিতে কষ্টে আছে মানুষ। দেশে টানা ১৫ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের পরও তা কমছে না, উল্টো বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কাজ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষকে স্বস্তিতে রাখা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার সুদহার বৃদ্ধি। কিন্তু সুদহার বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি কমাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দীর্ঘদিন সুদহার ও ডলারের দাম কৃত্রিমভাবে আটকে রেখে অর্থনীতির যে ক্ষতি করা হয়েছে, এখন তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত গুনছে সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিলম্বে হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ফল পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

প্রতি ছয় মাস পরপর মুদ্রানীতি ঘোষণার মাধ্যমে মুদ্রা সরবরাহসহ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ১৮ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। তবে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুষ্ঠান বর্জনের কারণে এবার ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হবে। জানা গেছে, এবারও সুদহার বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ থাকবে মুদ্রানীতিতে।

এদিকে দেশের মানুষ গত এক যুগের মধ্যে সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সবচেয়ে বেশি চাপে ছিলেন। এখনো সেই চাপ অব্যাহত আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা অর্থবছরওয়ারি হিসাবে এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। পুরো বছরে কোনো মাসেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। গত ১২ মাসের মধ্যে ৭ মাসই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। গত বছরের আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে উঠেছিল। যদিও বিদায়ী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার লক্ষ্য ছিল সরকারের।

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা ও জিডিপির ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। একই লক্ষ্য ঠিক রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকও মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজ করছে। দেশে মার্কিন ডলারের পাশাপাশি স্থানীয় টাকারও সংকট চলছে, বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্যহীনতায় রিজার্ভেও টানাটানি। তবে দামে ছাড় দেওয়ায় বাড়ছে প্রবাসী আয়। ব্যাংক খাত এখনো নিয়ন্ত্রণহীন। মোটাদাগে এসবই হচ্ছে এখন দেশের আর্থিক খাতের প্রধান সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তারা বছরে দুবার মুদ্রানীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা রক্ষার চেষ্টা করে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছর নীতি সুদহার দুই দফা বাড়িয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে সরকারের ব্যাংকঋণের সুদে। ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে ঋণগ্রহীতাদের ওপর। তাতে ঋণের চাহিদা কমে গেছে। এভাবে অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সেই চেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।