TAXNEWSBD
কর ফাঁকি অনুসন্ধানে এবার মাঠে এনবিআরের গোয়েন্দা সেল
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:২৫ পূর্বাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

আর্থিক খাতের দুর্নীতিবাজদের ধরতে বিএফআইইউ, দুদক, সিআইডির পাশাপাশি এবার মাঠে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। জনবলসংকটের জেরে বিভিন্ন কর অঞ্চলে কর ফাঁকিবাজদের তালিকা দিয়ে মামলার নির্দেশনা দিয়েছিল এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। এবার সারা দেশের প্রায় ৪০টি কর অঞ্চলে কর ফাঁকির মামলার নিষ্পত্তি, কর আদায়, জরিমানা ধার্য করাসহ নানা বিষয়ে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে নামছে সংস্থাটি। 

এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার চার মাস পেরিয়ে গেছে। এর মাঝে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি এবং অর্থপাচারের মামলা করা হয়েছে। জনবল সংকটের জেরে সিআইসির পক্ষে সব কর ফাঁকির মামলা হাতে নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে কর ফাঁকিবাজদের তালিকা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা নিষ্পত্তি, কর আদায় ও জরিমানা ধার্য করার নির্দেশনা দিয়েছিল সিআইসি।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের নির্দেশে সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব দেশের সব কর অঞ্চলে মামলার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য একজন যুগ্ম পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে টিম পাঠাবেন। পরিদর্শনের সময় তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন যুগ্ম পরিচালক আটটি করে কর অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।

সিআইসির যুগ্ম পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে তাঁর টিম প্রথম পর্যবেক্ষণ শুরু করবেন কর অঞ্চল-৬ দিয়ে। ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর দুদিন এই কর অঞ্চলে পর্যবেক্ষণ হবে। এরপর ২০২৫ সালের জানুযারির ১ ও ২ তারিখে পর্যবেক্ষণ করা হবে কর অঞ্চল-১১।

জানুয়ারির ৮ ও ৯ তারিখে কর অঞ্চল রংপুরের পর্যবেক্ষণে যাবে দলটি। একই মাসের ১৯ ও ২০ তারিখে খুলনা, ২১ ও ২২ তারিখে বরিশাল, ২৯ ও ৩০ তারিখে কর অঞ্চল-২১, ফেব্রুযারির ৫ ও ৬ তারিখে কর অঞ্চল-২৩ এবং সবশেষ ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি কর অঞ্চল- ২৫-এ পর্যবেক্ষণে যাবে এই দল। একই সময়ে অন্য দলগুলোও তাদের সূচি অনুযায়ী কর অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণে যাবে। এনবিআর সূত্র জানায়, বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) ঢাকার ভেতরে অবস্থিত ২৫টি কর অঞ্চল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, বগুড়া, রংপুরসহ দেশের সব কর অঞ্চলে চিহ্নিত কর ফাঁকিবাজদের তালিকা দিয়েছে সিআইসি।

জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসের ২৯ তারিখ থেকে শুরু হয়ে এই পর্যবেক্ষণ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে শেষ হবে। পর্যবেক্ষণের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সব প্রতিষ্ঠানই সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল।

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজের সুযোগ পেয়ে সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ যাঁরা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।  তিনি বলেন, ‘কোনো কর অঞ্চল যদি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে না পারে তাদের কাছ থেকে সে বিষয়ে জবাবদিহি করা হবে।’

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দুই শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা করেছে সিআইসি। আয়কর গোয়েন্দা কাজ করছে শতাধিক ব্যক্তির কর ফাঁকির তদন্তে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ও মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরও কাজ করছে সমানতালে। কাস্টমস গোয়েন্দা এ সময় শুল্ক ফাঁকির মামলা করেছে ৫৭টি।