দেশে সবচেয়ে বেশি করপোরেট কর ছাড় দেওয়া হয় শেয়ারবাজারের মূলধনি আয়ের ওপর। বছরে যার পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এটি ২০২১-২২ অর্থবছরের হিসাব। ওই অর্থবছরে করপোরেট কর ও ব্যক্তিশ্রেণির আয়করে কত ছাড় দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে এনবিআর।
কোনো কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে করের হার কমে যায়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে শর্ত সাপেক্ষে করপোরেট করের হার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। অন্যদের ক্ষেত্রে এই হার সাড়ে ২৭ শতাংশ। আবার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে করপোরেট কর সাড়ে ৩৭ শতাংশ।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই হার ৪০ শতাংশ। শেয়ারবাজারে এভাবেই কর ছাড় দেয় এনবিআর। শেয়ারবাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৩৬০।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে। এই ঋণের অন্যতম শর্ত হলো বাংলাদেশকে কর অব্যাহতি সুবিধা কমাতে হবে। শর্ত অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে করছাড়ের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে বাংলাদেশকে। আইএমএফের দেওয়া শর্তের পর নড়েচড়ে বসেছে এনবিআর। কোন কোন খাতে কী পরিমাণ কর অব্যাহতি সুবিধা রয়েছে এবং কোন কোন খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা কমানো যায়—এসব নিয়ে এনবিআর কাজ শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে কর অব্যাহতি–সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগের সাবেক সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, করছাড় অবশ্যই কমানো উচিত। দীর্ঘদিন ধরে যে পরিমাণ কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা বিনিয়োগে যতটা উৎসাহ দেবে বলে ভাবা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। শুধু করছাড়ই বিনিয়োগের মুখ্য নিয়ামক নয়। এ কারণে কর ছাড় দিয়েও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।