বাড়তি কর বসানোর আগে বাজারে এর প্রভাব বিশ্লেষণের প্রস্তাব করেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। দাতা সংস্থা বা অন্য কোনো চাপে পণ্য বা সেবার ওপর করারোপ চান না তারা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিদ্যমান কর আইনের বিভিন্ন ধারায় সংশোধন, পরিবর্তন ও এনবিআরের তিন বিভাগ (শুল্ক, আয়কর ও মূসক) সমন্বয়সহ বিভিন্ন দাবি ও প্রস্তাব জানান ব্যবসায়ীরা।গত সপ্তাহে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই), বেপজা, বেজা, বিডাসহ একাধিক সংগঠনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বসে এনবিআর। চলতি সপ্তাহে রিহ্যাব, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বারভিডাসহ বেশ কয়েকটি পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে বসবে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে উৎসে করহার যৌক্তিকীকরণ, করপোরেট করহার কমানো এবং অগ্রিম আয়কর ও টার্নওভার করনীতি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে এফআইসিসিআই।সংগঠনটির পক্ষে প্রস্তাবনা তুলে ধরে এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, সুইটমিট ও বেভারেজ পণ্যে ৩ শতাংশ ন্যূনতম কর করা হয়েছে। আগে দিতে হতো ০ দশমিক ৬ শতাংশ। এটা হওয়ার পর হয়তো অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে ১২০ টাকা, যা আগে ছিল ১০০ টাকা। দাম বাড়ার ফলে দেখা গেলো নতুন করে ১০০ ইউনিট বিক্রির স্থলে বিক্রি হলো ৭৫ ইউনিট। আগে যেখানে এনবিআর ৪ হাজার ৪৩৫ টাকা ভ্যাট ও সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি পেতো সেখানে এখন পাচ্ছে ৩ হাজার ৯৩৮ টাকা। এখানে এনবিআর ৪৩৮ টাকার রাজস্ব হারালো। আবার ন্যূনতম কর বাড়ানোয় বেশি পাচ্ছে মাত্র ২১০ টাকা। এখানে আসলে প্রভাব বিশ্লেষণ করা জরুরি। তা না হলে যেসব কোম্পানি এদেশে বিনিয়োগ করবে তারা উৎসাহ হারাবে।২০২৭ সালের মধ্যে একক ভ্যাট হার ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, যেসব খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, তা ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা যেতে পারে। যেসব খাতের ভ্যাট ১০ শতাংশের নিচে, সেসব খাতের হার ১০ শতাংশ করা যেতে পারে। এতে কার্যকর ভ্যাটের ভার কমে যাবে।
করপোরেট কর বাস্তবসম্মত করার প্রস্তাব করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। সংগঠনটির অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে- ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য আলাদা করহার, কর প্রশাসন ও নীতি আলাদা করা, কর ব্যবস্থাপনা অনলাইনভিত্তিক করা, রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) প্রদর্শনের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে অনুমোদিত তহবিলের ওপর করহার যৌক্তিক করা ইত্যাদি।ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) বাধ্যতামূলক না করে শুধু টিআইএন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে অ্যামচেম। প্রত্যন্ত, অনগ্রসর ও অনুন্নত এলাকার বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা কর অবকাশ সুবিধা প্রস্তাব করে বেপজা। এদিকে স্থলবন্দরগুলোর সীমানা এক কিলোমিটার করে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার।