
বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে যাচ্ছে সরকার। গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সচিবালয়ের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ-সংক্রান্ত আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এগুলো হলো প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময় ৬০ দিন পর্যন্ত নিবন্ধন ছাড়াই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন। দুই মাসের বেশি থাকলে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে হবে। যেসব প্রবাসীর বিএমইটি নিবন্ধন কার্ড আছে, তারা নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন বিনা খরচায়। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে শুল্ক দিতে হবে। যেসব প্রবাসীর বিএমইটির কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন কেনার বৈধ কাগজ নিজের সঙ্গে রাখতে হবে।স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হবে। এতে করে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে। বর্তমানে বৈধপথে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩ থেকে ১৪টি কারখানায় উৎপাদন করা মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, তা না হলে কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি ও এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে। কারও অজান্তে কেউ তার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কিনা, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অপরাধ ও রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সব সময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করতে হবে। বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে ক্লোন মোবাইল, চুরি বা ছিনতাই করা ফোন। বন্ধ করা হবে রিফারবিশড মোবাইল ফোন আমদানিও।
১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা মজুত ফোনের মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই নম্বর আছে, সেই তালিকা বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে ক্লোন ফোন ও রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না। ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর। এদিন থেকে বৈধ আইএমইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। অবৈধ আমদানি, চোরাচালান ও ক্লোন ফোন বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে।এ ছাড়া বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই এর বিরুদ্ধে কাস্টমস থেকে অভিযান চলবে।প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী), ২০২৫-এ মোবাইল সিমের ইকেওয়াইসি ও আইএমইআই নিবন্ধন-সংক্রান্ত ডেটা সুরক্ষার নিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে। নতুন একটি ধারা যোগ করে রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত উপাত্ত লঙ্ঘনকারীদের অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে।