TAXNEWSBD
রাজস্ব খাতে অটোমেশন, কর জালের আওতা আরও বাড়ছে
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৩৭ অপরাহ্ন
TAXNEWSBD

TAXNEWSBD

অনলাইনে রিটার্ন প্রদান বাধ্যতামূলক করা, অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালুসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বহুল প্রতীক্ষিত অটোমেশন শুরু হয়েছে। এতে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে আরও বেশি ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তা সম্ভব হলে কর ফাঁকি রোধ করা সম্ভব হবে, কমবে গ্রাহক হয়রানি।২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে তাদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্টে ৫ ধরনের করদাতা ব্যতীত সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে এনবিআর। দেশে বর্তমানে ১ কোটি ১২ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাদের মধ্যে প্রতি বছর মাত্র ৪০ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেন।সংশ্লিষ্টদের দাবি, অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার ফলে এ বছর রিটার্নধারীর সংখ্যা বাড়বে।

গত বছর নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারাদেশে ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। সেই সময় ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছিলেন।এদিকে কর জাল সম্প্রসারণ ও রাজস্ব আদায় বাড়াতে নতুন ১২টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউজ ও বিশেষায়িত ইউনিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। এসবের আওতায় এনবিআরের কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগে মোট তিন হাজার ৫৯৭টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে।এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা  বলেন, এ পুনর্গঠনের মাধ্যমে পরোক্ষ কর আহরণের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়বে। দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।এনবিআর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভ্যাট অটোমেশনের মাধ্যমে আগামী বছর এক লাখ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি আগামীতে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা ও সেবাপ্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। সেই হিসেবে ভ্যাটের আওতা আর বিস্তৃত করা হবে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ বলেন, বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছয় লাখ ৪৪ হাজার। ই সহগ, ভ্যাট স্মার্ট চালান, ভ্যাট ফাঁকি মোকাবিলায় রিস্ক-বেজড অডিট সিস্টেম চালুসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও এক লাখ নতুন ভ্যাট নিবন্ধনের কাজ চলমান।অটোমেশনের বিষয়ে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন করতে হলে সিস্টেম ও প্রসেসে উন্নতি করতে হবে। রাজস্ব আদায় সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং, চ্যালেঞ্জটা বড় হলে চেষ্টাটাও বড় হয়। কোনো অবস্থায় করদাতাকে জুলুম যেন না করা হয়। এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। পাশাপাশি কর ফাঁকি রোধে আমরা জোর চেষ্টা করছি। প্রথমবারের মতো অডিটের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে করদাতার কর দেওয়ার যোগ্যতা আছে কি না সেটা দেখার কথাও বলা হয়েছে। আমরা করফাঁকিবাজদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে চাই।অটোমেশনের উদ্যোগ স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জাগো নিউজকে বলেন, অটোমেশন ছাড়া দুর্নীতি কমবে না। বন্ডসহ সব প্রক্রিয়া দ্রুত অটোমেশনে যেতে হবে।