ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

চট্টগ্রাম বন্দর কর্মকর্তারা শুল্ক ফাঁকি ঠেকিয়েছে

আমদানির নথি অনুসারে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে আর্ট কাগজ আমদানির ঘোষণায় এই ব্যান্ড রোল নিয়ে আসে। কিন্তু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় চালানের তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্দেহ হয় শুল্ক কর্মকর্তাদের। এ জন্য শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে চালানটি খালাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। মঙ্গলবার কনটেইনার খুলে ২৪৬ প্যাকেটে সিগারেটের ব্যান্ড রোল দেখতে পান তাঁরা। পুরো কনটেইনারের ব্যান্ড রোল গণনা করে ৩ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজারটি ব্যান্ড রোল পাওয়া যায়। কিছুসংখ্যক কাগজের প্যাকেট পাওয়া যায় কনটেইনারের সামনের অংশে।

চীনের ওই কারখানার ওয়েবসাইটে দেখা যায়, পণ্যের তালিকায় বাংলায় লেখা ব্যান্ড রোলের ছবি। মঙ্গলবার কাস্টমস কর্মকর্তারা যে ধরনের ব্যান্ড রোল উদ্ধার করেছেন, তার সঙ্গে ওয়েবসাইটে থাকা ব্যান্ড রোলের মিল আছে। ওয়েবসাইটে তারা স্পেশাল ক্রাফট টোব্যাকো লেবেল পণ্যের তালিকায় বাংলায় লেখা ব্যান্ড রোলের ছবি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নকলরোধী তামাকের লেবেল, পাসপোর্ট, ব্যালট পেপার, ভোটার আইডি কার্ড বানায় বলে ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
চীনের শেনজেন প্রদেশের দিঘি এন্টি ফেইক কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা থেকে এক কনটেইনার কাগজ আমদানি করে চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার খুলে কাগজের বদলে সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার হওয়া বাংলায় লেখা ব্যান্ড রোল (শুল্ক পরিশোধের লেবেল) পেয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এই ব্যান্ড রোল উদ্ধার করে ১১০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি ঠেকিয়ে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টমের উপকমিশনার মো. সালাউদ্দিন রিজভী বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে এভাবে ব্যান্ড রোল ছাপিয়ে আনার ঘটনা এই প্রথম শনাক্ত হলো। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় এই ঘটনা উদ্ঘাটন করা হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই চালান বেরিয়ে গেলে কমবেশি ১১০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হতো। বাংলাদেশে বিড়ি-সিগারেটের প্যাকেটে কাগজের যে পাতলা আবরণ ফিতার মতো জড়ানো থাকে, সেটি হলো ব্যান্ড রোল। রাজস্ব বোর্ডের এসআরও অনুযায়ী, ব্যান্ড রোল ছাপায় সরকারি প্রতিষ্ঠান দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ। সেখান থেকে তা সংগ্রহ করে সিগারেটের কোম্পানিগুলো। আর বাজারজাতের সময় ব্যান্ড রোল ব্যবহার অনুযায়ী ভ্যাট বিভাগে শুল্ককর পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ, সিগারেটের কর আদায় হয় এই ব্যান্ড রোলের মাধ্যমে।

কাস্টম ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,এই ঘটনায় রাজস্ব আদায়ে বড় ঝুঁকি উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। কারণ, রাজস্ব আদায়ের শীর্ষ খাত হলো তামাক। গত অর্থবছরে এই খাত থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
শুল্ক বিভাগ জানায়, জব্দ করা ব্যান্ড রোল নিম্নস্তরের ১০ শলাকাবিশিষ্ট সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহারের উপযোগী হালকা খয়েরি রঙের। সেই হিসাবে নিম্নস্তরের সিগারেট স্ট্যাম্পের রং হালকা খয়েরি, যার সর্বোচ্চ খুচরামূল্য ৩৯ থেকে ৬২ টাকা; যার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ ও মূসকের ১৫ শতাংশ।