ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

অনলাইনে রিটার্ন দিতে পারবেন চাকরিজীবীরা : এনবিআর

এনবিআরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, অনলাইন সিস্টেমে করদাতার সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। করদাতা শুধু রিটার্ন দেওয়ার সময় মৌলিক তথ্য জানাবেন। রিটার্ন তৈরি করে দেবে এনবিআরের সিস্টেম। এতে করদাতারা কর দিতে উৎসাহিত হবেন। চাকরিজীবী করদাতারা নিজের প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের নাম দিলেই রিটার্ন বানিয়ে দেবে এনবিআরের সিস্টেম
ভাবুন, আয়কর বিষয়ে আপনি শুধু কিছু তথ্য দেবেন। এরপর আপনার আয়কর রিটার্ন তৈরি করে দেবে কর বিভাগ। আর আপনি ঘরেই বসেই কর পরিশোধ করতে পারবেন। এমন সহজ প্রক্রিয়ায় রিটার্ন আর এখন স্বপ্ন নয়। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই করদাতারা এমন সুখবর পাবেন।

জানা গেছে, করদাতারা যাতে ঘরে বসে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারেন, সে জন্য সেপ্টেম্বর মাসেই অনলাইন রিটার্ন (ই-ফাইলিং) ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগ। চাকরিজীবী করদাতারা নিজের প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের নাম দিলেই রিটার্ন বানিয়ে দেবে এনবিআরের ওই সিস্টেম। তখন ঘরে বসেই তাঁরা করের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দেওয়া যাবে। করদাতারা সাধারণত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেই বেশি রিটার্ন দেন। এই মৌসুমেই যাতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যায়, সে জন্য সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে এনবিআরের আয়কর বিভাগের সাবেক সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া গেলে করদাতার সঙ্গে কর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো দেখাসাক্ষাৎ হবে না। ফলে কোনো হয়রানির সুযোগ থাকবে না। আবার এনবিআরের সিস্টেমেই যেহেতু করদাতার সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে, তাই কাগজপত্র সংগ্রহে রাখার ঝামেলা থাকবে না। আর কর কর্মকর্তাদেরও সনাতনী উপায়ে করসংক্রান্ত নথি সংরক্ষণ করতে হবে না।
গত বছরের নভেম্বর মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অনলাইন রিটার্ন সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যে সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ ও পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। এখন বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), আইবাস ব্যবস্থা, সঞ্চয় বিভাগকে এই সিস্টেমে সম্পৃক্ত করার কাজ চলছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে এনবিআরের চুক্তি হয়েছে। ফলে ওই তিন ব্যাংকের গ্রাহকদের উৎসে কর কাটার তথ্য সহজেই এনবিআরের নতুন সিস্টেমে যুক্ত হবে। ফলে কোনো করদাতার উৎসে কর কত কাটা হয়েছে, তার বিপরীতে করের পরিমাণ সহজেই হিসাব করা যাবে।

এনবিআরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম বছরে ৭০-৮০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছরে শতভাগ করদাতাকে অনলাইন ব্যবস্থায় আনা হবে। এ বছর সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পর্যায়ের চাকরিজীবীরা সবাই অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এ জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে এনবিআরের সিস্টেমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। তাই এনবিআর শিগগির এসব প্রতিষ্ঠানকে সিস্টেমে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য চিঠি দেবে। তখন প্রতিষ্ঠানগুলো এনবিআরের অনলাইন সিস্টেমে কর্মীর তথ্য আপলোড করবে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের কর্মীর কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), বেতন, মাসিক বেতনের বিপরীতে দেওয়া উৎসে করের পরিমাণ এসব তথ্য আপলোড করে দেবে। অবশ্য এখনো কর্মীর এসব তথ্য সনাতনী উপায়ে জানাতে হয়।

যদি বেতনের বাইরে আর কোনো আয় না থাকে, তবে চাকরিজীবী করদাতা শুধু অনলাইন রিটার্নে টিআইএন নম্বর ও প্রতিষ্ঠানের নাম লিখবেন। এনবিআরের সিস্টেমই রিটার্ন তৈরি করে দেবে। এরপর করদাতা শুধু কনফার্ম করে দেবেন। তাঁকে অফিসের সনদ ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে না। করদাতার যদি ডিপিএস, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র থাকে, তাহলে এগুলোর বিপরীতে সুদ বাবদ কত আয় হয়, তা-ও এনবিআরের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে।