১। মূল্য সংযোজন কর (মূসক) কি ?
মূল্য সংযোজন কর বা মূসক একটি পরোক্ষ কর, যা ভোক্তার নিকট হতে আদায়যোগ্য। বাংলাদেশে ভোগকৃত পণ্য বা সেবা মূল্যের উপর ১৫% হারে এই কর আরোপিত। অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য/সেবা ব্যতীত বাংলাদেশে উৎপাদিত, সরবরাহকৃত বা আমদানীকৃত সকল পণ্য ও সেবার উপর মূসক প্রযোজ্য। বাংলাদেশের ভিতর সম্পাদিত লেনদেনের জন্য যিনি পণ্য বা সেবা সরবরাহ করেছেন তার কাছ থেকে মূসক আদায় করা হয়ে থাকে। তাদেরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন বিভাগীয় মূসক অফিসে নিবন্ধিত হতে হয় এবং কর মেয়াদের (সাধারণত: প্রতিটি ইংরেজি মাস) শেষে কর পরিশোধ ও দাখিলপত্র পেশ করতে হয়। আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মূসক আদায় করে থাকেন। শুল্ক স্টেশনে শুল্ক-করাদি আদায়ের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আমদানি পণ্য খালাসের আগেই আমদানিকারকের নিকট থেকে এই মূসক আদায় করা হয়। যথাযথ মূসক পরিশোধের দায়িত্ব আমদানীকারক বা পণ্য বা সেবা সরবরাহকারী নিবন্ধিত ব্যক্তির। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সরবরাহকারী ক্রেতার কাছ থেকে যে মূল্য গ্রহণ করেন তাতে মূসক অন্তর্ভুক্ত থাকে; তাই, ক্রেতাই সরবরাহকারীকে কর প্রদান করেন, আর সরবরাহকারী আদায়কৃত কর (প্রয়োজনীয় উপকরণ কর রেয়াত সমন্বয়ের পর) সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করেন। গ্রাহক বা ক্রেতার নিকট থেকে মূল্য না পেলেও অর্থাৎ কোন পণ্য/সেবা বিক্রি না হলেও সরবরাহকারীকে তার শূন্য করদায়িতা বিষয়ে নির্দিষ্ট কর মেয়াদ শেষে হিসাব (দাখিলপত্র) পেশ করতে হবে।
মূসক বা ভ্যাট একটি স্ব-নির্ধারণী কর ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় নিবন্ধিত করদাতাগণ নিজেরাই তাদের প্রদেয় করের পরিমাণ নির্ধারণ করে, তা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তাদের দাখিলপত্রে উল্লেখ করেন এবং ট্রেজারি চালানের কপিসহ দাখিলপত্র স্থানীয় মূসক কার্যালয়ে দাখিল করেন। করদায়িতার (দাখিলপত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিলাদি) অডিটকরণ বা সঠিকতা যাচাই পরবর্র্র্তী সময় সম্পাদিত হয়ে থাকে।