বঙ্গবন্ধুর নামে থাকা প্রতিষ্ঠানে অনুদানে করছাড় বাতিল করছে সরকারখেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমলদেশে উৎপাদিত প্রসাধনীতে করের বোঝা, আমদানিতে ছাড়ভোজ্যতেল আমদানিতে কমলো ভ্যাটখেজুর আমদানিতে শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের সুপারিশ
No icon

নতুন বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনায় বরাদ্দ বাড়ছে

আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের চেয়ে চার হাজার ৩০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে এখাতে নতুন অর্থবছরের জন্য ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে এখাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকির পেছনেই বড় অংকের অর্থ ব্যয় হবে। এখাতে ভর্তুকির প্রস্তাব করা হচ্ছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বেসরকারি খাতে যে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠেছে সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তাদের ভর্তুকি পূরণে এ অর্থ ব্যয় হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা খাতে কী পরিমাণ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে তার একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এতে এ তিনটি খাতে ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে ভর্তুকি খাতে ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, প্রণোদনা খাতে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং নগদ সহায়তা খাতে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার পরই রয়েছে কৃষি খাত। এ খাতে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ থাকছে ৯ হাজার কোটি টাকা। খাদ্য খাতে ভর্তুকি থাকছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ থাকছে ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা হিসেবে প্রস্তাব করা হবে ৪ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও পাটজাত দ্রব্যাদি খাতে প্রণোদনা দেওয়া হবে ৫০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে।

ভর্তুকির বিষয়ে জানা গেছে, গেল পাঁচ বছর ধরে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (বিপিসি) আমরা কোনো ভর্তুকি দিচ্ছি না। এর আগে ভর্তুকির সবচেয়ে বড় অংশটি বিপিসিকে দেওয়া হতো। এর কারণ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি দামে জ্বালানি তেল কিনে দেশে কম দামে বিক্রি করতে হতো। এর ফলে বিপুল পরিমান অর্থ ঘাটতি পড়তো। ঘাটতি পূরণের জন্য প্রতি বছর সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের পেছনে মোটা অঙ্কের অর্থ ভর্তুকি দিতে হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে আসায় বিপিসি কম দামে তেল কিনে দেশে বেশি দামে বিক্রি করছে এবং মুনাফাও করছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে এখন আর কোনো আর্থিক সহায়তা দিতে হচ্ছে না। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতে সরকারকে অনেক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এর একটি বড় অংশ যাচ্ছে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য। আর একটি যাবে এলএনজি আমদানি খাতে। ফলে আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হবে।

এ দিকে চলতি অর্থবছরে যে ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ভর্তুকি খাতে রাখা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এরপরই কৃষি খাতে রয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরের (২০১৭-২০১৮) বাজেটে ভর্তুকি, নগদ সহায়তা, প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ৩ ভাগ। তার আগের অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ২ ভাগ। যদিও সংশোধিত বাজেটে এ ভর্তুকি ২৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এর আগে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।