দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের দাবি করেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সদস্যদের একাংশ। রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআইয়ের কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার বেলা ১১টায় মানববন্ধনে এই দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদের ব্যানারে তাঁরা এ দাবি জানান।
মানববন্ধনের সমন্বয়কারী আবুল কাশেম হায়দার বলেন, এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা পদত্যাগ না করলে পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আবুল কাশেম হায়দার বলেন, এফবিসিসিআইকে রাজনৈতিক ইউনিট বানিয়ে ফেলা হয়েছে। সাধারণ সদস্যরা কথা বলতে পারেন না। নেতারা সরকারকে খুশি করতে ১৫ টাকার গ্যাসের ইউনিট ৩০ টাকা করার কথা বলেন। সে কারণে শিল্পকারখানা রুগ্ণ হয়ে পড়েছে। এস আলমদের লুটপাটের কারণে ব্যাংক খাত ধুঁকছে। অথচ ব্যবসায়ীরা ঋণ পাচ্ছেন না। পেলেও ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ সুদ দিতে হচ্ছে। লুটপাটের কারণেই সুদের হার এতটা বেড়েছে।
এর আগে গত সোমবার এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানায় সংগঠনটির সদস্যদের একাংশ। এ বিষয়ে তাঁরা অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ বছরে এফবিসিসিআইয়ের কার্যক্রম ব্যবসা–বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের স্বার্থে পরিচালিত হয়নি; বরং অনির্বাচিত ও একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের তোষামোদী ও ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলসহ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিল। রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু অসাধু ও অব্যবসায়ী পর্ষদের নেতৃত্বে এসে এফবিসিসিআইয়ের অফিসকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করে। তারা বিভিন্ন বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেশের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠছে। এফবিসিসিআইয়ের পাশাপাশি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠেছে।