সিগারেটে কার্যকর করারোপ না করায় রাজস্ব হারিয়েছে সরকারআরও এক মাস বাড়ল রিটার্ন জমার সময়এনবিআর আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের যাত্রা শুরুনকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর দাবিঅনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবে
No icon

কর্পোরেট কর কমালে বিনিয়োগ বাড়বে

কর্পোরেট কর কমালে বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করে দেশের পেশাদার হিসাববিদদের নিয়ন্ত্রক সংগঠন ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি)। তাই আগামী বাজেটে সব খাতে কর্পোরেট করহার ২ শতাংশ করে কমানো, কর হিসাব ও রিটার্ন ফরম সহজীকরণ, ভ্যাটের তালিকাভুক্তির সীমা ৪৮ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে রোববার আগামী জাতীয় বাজেটের ওপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভাবনা শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে আইসিএবির প্রেসিডেন্ট এএফ নেসার উদ্দিন এসব কথা বলেন। ট্যাক্সেশন ও কর্পোরেট লজ কমিটির চেয়ারম্যান ও আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার হুমায়ুন কবীর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজস্ব আয় বাড়ানো, আইনের বৈপরীত্য পরিহার ও ফাঁক-ফোকর কমানো, আইনের প্রয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, বিনিয়োগ কার্যক্রমকে অধিকতর উৎসাহ ও দেশ থেকে মূলধন পাচারের কথা বিবেচনায় নিয়ে আইসিএবির বাজেট প্রস্তাব বানানো হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে করদাতাদের হয়রানি কমবে এবং দেশে বিনিয়োগ বাড়বে।

বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরে হুমায়ুন কবির বলেন, উন্নয়নশীল যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে কর্পোরেট করহার বেশি। ভারত ও চীনের মতো দেশে এ করহার কমিয়ে আনা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ২৭ শতাংশ এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিকে ৩৭ শতাংশ হারে এ কর দিতে হয়।

এটি বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রত্যাশার বিপরীত। বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে কর্পোরেট কর কমাতে হবে। এক বছর অনেক বেশি না কমিয়ে প্রতিবছর ২ শতাংশ হারে কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছি আমরা। এতে দীর্ঘমেয়াদে সরকার লাভবান হবে । রাজস্ব আহরণ বাড়বে।

ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করহার কমানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যমান করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত কর দায় না চাপিয়ে করযোগ্য ব্যক্তিদের কর নেটে অন্তর্ভুক্ত করে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো যায়। ব্যক্তিশ্রেণীর জন্য বিদ্যমান কর স্তর দ্বিতীয় ধাপ ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা দরকার। মূল্যস্ফীতি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তিনি।

আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ করার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে বর্তমানে যেসব ফরম পূরণ করতে হয় এবং হিসাবনিকাশ করতে হয়, তা অত্যন্ত জটিল। এটি সহজতর করতে হবে। কর রেয়াত নেয়ার ক্ষেত্রে আয়ের ২৫ শতাংশের ওপর সরাসরি ১৫ শতাংশ রেয়াত দিলে রিটার্ন দাখিল সহজ হবে।

নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে বাজেট প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্টরা করদাতার প্রতিনিধি হিসেবে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারত। নতুন আইনে এ বিধান রাখা হয়নি। এটি সন্নিবেশিত করতে হবে। তালিকাভুক্তির সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ লাখ টাকা এবং টার্নওভার ট্যাক্সের সীমা দেড় কোটি থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেন তিনি।

করনেট বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে আইসিএবির সাবেক এই সভাপতি বলেন, করের আওতা বাড়াতে করদানে সক্ষম ব্যক্তি চিহ্নিত করতে হবে। ন্যূনতম করের পরিমাণ কমিয়ে অধিক মানুষকে করের আওতায় আনা যেতে পারে। করযোগ্য মানুষকে খুঁজে বের করতে অর্থবহ জরিপ পরিচালনা করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিএবির সহসভাপতি এনকেএ মুবিন, মনিরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিল সদস্য ড. আবু সাঈদ খান, নাছির উদ্দিন আহমেদ, কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ ফুরকান উদ্দিন প্রমুখ।