মূলধনি মুনাফার করহার কমাল এনবিআরআয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়বে কিনা, জানাল এনবিআরচাল আমদানিতে আরও ২৩ শতাংশ করভার কমালো সরকারবছরে আয় সাড়ে ৩ লাখের নিচে হলে কর দিতে হবে নাচাল আমদানিতে শুধু ২% অগ্রিম আয়কর দিতে হবে
No icon

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে চূড়ান্ত হচ্ছে চুক্তি ও শুল্ক

ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। এ নিয়ে শিগগিরই বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রিদেশীয় চুক্তি শেষে নেপালের ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। এরই মধ্যে সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত করা হয়েছে।তবে বিদ্যুৎ আমদানিতে শুল্ক নির্ধারণের বিষয়টি অমীমাংসিত আছে। সেটিও নিষ্পত্তি দরকার। শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে নেপাল। ফলে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ও অমীমাংসিত শুল্কহার এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ রবিবার বৈঠকে বসছে এসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ।এর প্রধান হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।  বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য মতে, নেপালের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত না থাকায় ভারতের ওপর দিয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। ২৫ বছর মেয়াদে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি হবে।কারিগরি ও অন্যান্য বিষয় এরই মধ্যে চূড়ান্ত হলেও বিদ্যুতের দাম কত হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে ভারত থেকে আমদানিকৃত অন্যান্য বিদ্যুতের তুলনায় এর দাম কম হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ক্লিন এনার্জি থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই লক্ষ্য পূরণে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে যাচ্ছে সরকার।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য উভয় দেশের সঙ্গে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।আমরা এ বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে রবিবার (আজ) বৈঠক হবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন, তাতে জড়িত ভারত। শিগগিরই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হবে বলেও তিনি জানান।সম্প্রতি অনলাইন কাঠমাণ্ডু পোস্ট বলেছে, নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি বিলম্ব হচ্ছে। কারণ দেশটি ভারতের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ও বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে শুল্ক নির্ধারণ প্রসঙ্গটি এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে শুষ্ক মৌসুমে ভারতের সঞ্চালনবিষয়ক অবকাঠামোর মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করতে চায় নেপাল।বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে সরকার প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রায় ২৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। এরই ধারাবাহিকতায় নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ভুটান থেকে এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে ভুটান থেকে পর্যায়ক্রমে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা শাখা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন  বলেন, শিগগির বাংলাদেশ-নেপাল-ভারতের একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হবে। তার পরই নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসা শুরু হবে।বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, শীতের সময় বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। এ সময় আবার নেপালে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যায়। তাই শীত মৌসুমে যখন তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়, তখন আমাদের দেশ থেকে তারা বিদ্যুৎ নিতে পারবে। গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে নেপালের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ আমরা আমদানি করতে পারব। এতে দুই দেশই লাভবান হবে।জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, নেপালের জলবিদ্যুতের দাম কত পড়বে, সেই বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তার পরও কয়লা ও এলএনজি থেকে নেপালের জলবিদ্যুতের দাম অনেক কম পড়বে আশা করা যায়।