বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ছিল আয়কর মেলার ছিল প্রথম দিন। বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দিনভর রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। তবে আজ ছুটির দিন শুক্রবারে আয়কর মেলায় যেন স্রোত নেমেছে। সকাল থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আয়কর দিচ্ছেন করদাতারা। করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য এবার আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীর রমনা থানার বেইলি রোড সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাবে। শুক্রবার সকালে আয়কর মেলা প্রাঙ্গণে সরেজমিন দেখা যায়, সব কটি প্রবেশ পথ ধরেই ভেতরে প্রবেশ করছেন করদাতা ও সেবাপ্রার্থীরা। প্রথমে হেল্পডেস্কে যাচ্ছেন। তারপর দরকারি সব ফরম পূরণ শেষে কর অঞ্চলভেদে বিভিন্ন বুথে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।
করদাতাদের দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে রিটার্ন জমা দিতে হচ্ছে। রিটার্ন জমা দেয়ার পাশাপাশি কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতেও মেলায় ভিড় করছেন করদাতারা। করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে এক প্রকার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ।
দ্বিতীয় দিনে মেলা শুরুর আগেই করদাতা ও সেবাপ্রার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের ভিড়। বেশি ভিড় দেখা গেছে হেল্প ডেস্ক ও রিটার্ন জমা দেয়ার বুথে।
মেলার আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার হওয়ায় করের আওতাধীন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা মেলায় আসছেন। আয়কর দিচ্ছেন। যে কারণে সকাল থেকে ভিড় বেশি। বেলা গড়ালে এ ভিড় আরও বাড়বে।
আয়কর দিতে আসা বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান চৌধুরী মাসুদ বলেন, এখানে আজ অনেক ভিড়। তবে আগে থেকে আয়কর দেবার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানা থাকায় সহজেই বুথে আসতে পারছি। তবুও লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। সর্বোচ্চ আধাঘণ্টার মধ্যে আশা করি আয়কর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারব। মেলা সংশ্লিষ্টরা অনেক হেল্পফুল। গত বছরের তুলনায় এবার সময়ও কম লাগছে। তবে হেল্প ডেস্কের সবাই পারদর্শী নয় বলে মনে হয়েছে।
অন্যদিকে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের কোয়ালিটি কন্ট্রোল বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘণ্টাখানেক হলো আয়কর মেলার লাইনে আছি। তবে খারাপ লাগছে না। এখানে আমার মতো আরও অনেকেই আয়কর দিতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। বড় বিষয় হচ্ছে, আমি কর দিচ্ছি।
সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর স্লোগান সামনে রেখে করসেবা প্রদান ও কর সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছরের মতো এবারও আয়কর মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে বসা সপ্তাহব্যাপী এ মেলা চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।
এনবিআর জানিয়েছে, এবারের মেলায় হেল্প ডেস্ক, রিটার্ন বুথ ও ই-পেমেন্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে ই-টিআইএন জোন ও রিটার্ন পূরণের স্থান। মেলা প্রাঙ্গণে এবার ৩৯টি হেল্প ডেস্ক করা হয়েছে, যা গতবছর ছিল ৩৩টি। রিটার্ন বুথ রাখা হয়েছে ৫২টি, যা গতবছর ছিল ৪৯টি। আর ই-পেমেন্ট বুথ করা হয়েছে ১৪টি, যা গতবছর ছিল ১টি।