![](https://taxnewsbd.com/uploads/1684754044.jpg)
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার রিজার্ভ বেড়ে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি চলে গেছে। তাতে প্রায় এক বছরের মধ্যে ভারতের রিজার্ভ সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, গত ১২ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের রিজার্ভ ৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন বা ৩৫৫ কোটি ডলার বেড়েছে। সব মিলিয়ে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন বা ৫৯ হাজার ৯৫২ কোটি ডলার।
এর আগের সপ্তাহে অর্থাৎ ৫ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ৭ দশমিক ১৯৬ বিলিয়ন বা ৭১৯ কোটি ডলার, তখন রিজার্ভ ছিল ৫৯৫ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন বা ৫৯ হাজার ৫৯৭ কোটি ডলার। আরবিআইয়ের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রিজার্ভের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে ৩৫০ কোটি ডলার, যার পরিমাণ এখন ৫২৯ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন বা ৫২ হাজার ৯৫৯ কোটি ডলার।
সেই সঙ্গে দেশটির রিজার্ভে স্বর্ণ মজুতের পরিমাণও বেড়েছে-অর্থমূল্যের দিক থেকে যা বেড়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার, সব মিলিয়ে রিজার্ভে রক্ষিত স্বর্ণের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি ডলার। তবে এ যাবৎকাল ভারতের রিজার্ভ সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে, তখন দেশটির বিদেশি মুদ্রার মজুত ছিল ৬৪৫ বিলিয়ন বা ৬৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের পর রিজার্ভ কমার মূল কারণ হলো আমদানি করা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। সেই সঙ্গে রুপির ধারাবাহিক দরপতন ঠেকাতে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বারবার মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপ করেছে, অর্থাৎ রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে রুপির দরপতন ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। তারপরও গত বছর রুপির সর্বোচ্চ দরপতন হয় এবং এখনো সেই ধারা অব্যাহত আছে। এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ অর্থাৎ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ-সবাই কমবেশি বিদেশি মুদ্রার সংকটে পড়েছে।
গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আমদানি ব্যয় অনেকটা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে সংকটের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় আরও একদফা বৃদ্ধি পায়। ফলে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়। পাকিস্তান অবশ্য তার আগে থেকেই আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছে।
কিন্তু ভারত পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনা বাড়িয়েছে। রাশিয়াই এখন ভারতের জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় উৎস, যদিও যুদ্ধের আগে রাশিয়ার কাছ থেকে খুব সামান্য পরিমাণে তেল কিনত দেশটি।
এ ছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে ডলার ছাড়াও অন্যান্য মুদ্রায় তেল কিনছে ভারত। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যের চেষ্টাও করছে তারা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে তারা রুপিতে বাণিজ্য শুরু করেছে; বাংলাদেশের সঙ্গেও শিগগিরই রুপিতে বাণিজ্য শুরু হবে জানা গেছে। এসব কারণে ভারতে যেমন মূল্যস্ফীতির হার খুব একটা বাড়েনি-সীমার মধ্যেই আছে-তেমনি বিদেশি মুদ্রার সংকটও তৈরি হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে বিদেশি মুদ্রার সংকট প্রকট হলেও ভারতের রিজার্ভ প্রতি মাসেই কমবেশি বাড়ছে।