ইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবেউল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেই
No icon

অসময়ে বদলি নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ

অতিরিক্ত কর কমিশনার, উপ-কর কমিশনার ও সহকারী কর কমিশনার পদে ৬৭ কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ দিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রাজস্ব প্রশাসনে গতিশীলতা আনা, সুশাসন ও জনকল্যাণমুখী করে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে এ বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে অল্প সময়ের মধ্যে বারবার বদলির কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেক কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সর্বশেষ বদলির আদেশের কয়েক দিন আগে বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের আবারো বদলি করা হয়েছে। এক জায়গায় বদলির পর তিন বছর কাজ করার সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে তা বিবেচনা করা হয়নি। একজন কর্মকর্তাকে বছরে দু-তিনবার একাধিক জায়গায় বদলির কারণে কাজ গুছিয়ে উঠতে পারেন না তাদের কেউ কেউ। ফলে রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। নতুন উদ্ভাবনীর ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েন তারা। অন্যদিকে পারিবারিক জীবনেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় এসব কর্মকর্তাদের।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার আলাদা প্রজ্ঞাপনে ৬৭ জন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে এনবিআর। এর মধ্যে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনারের তিনজনের দপ্তর পরিবর্তন করে দুজনকে ঢাকার বাইরে পাঠানো হয়েছে। উপ-কর কমিশনারদের ৩১ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়েছে। সহকারী কর কমিশনারদের মধ্যে বদলি করা হয়েছে ৩৩ জনকে। এদের মধ্যে এমন অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা কয়েক দিন আগেই বদলিজনিত কারণে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছিলেন। নতুন কর্মস্থলে দায়িত্ব গ্রহণ ও কাজ গুছিয়ে নেয়ার আগেই দপ্তর পরিবর্তনে তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এতে রাজস্ব আহরণও এক ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে অভিযোগ করছেন তারা।

সম্প্রতি বদলির আদেশ পাওয়া এনবিআরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রাজস্ব কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ধরে রাখতে বদলির ব্যবস্থা করা হয়। তবে রাজস্ব বোর্ডে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের কর্মকর্তাদের বিশেষ গ্রুপ গড়ে উঠে বদলির বিষয়গুলো তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। তাদের কেউ কেউ আবার দুর্নীতির সঙ্গেও জড়িত। এ গ্রুপ ভাঙার প্রয়োজন হয়ে উঠেছে, না হয় বোর্ড সম্পর্কে মানুষের খারাপ ধারণা তৈরি হবে। এর বাইরে বারবার দপ্তর পরিবর্তনের কারণে রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়াও ব্যাহত হতে পারে।

এনবিআর জানিয়েছে, মাঠ প্রশাসনে স্বচ্ছতা, দক্ষতা, জবাবদিহিতা বাড়াতে সারা বছরই বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দপ্তর পরিবর্তন করে এনবিআর। এক্ষেত্রে বছরের শুরুতে প্রতি বছরই বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। চলতি বছরে জানুয়ারির শুরু থেকে কয়েকশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে সদস্য পদে পদোন্নতিসহ বেশ কয়েকজন কর কমিশনারের বদলির আদেশও রয়েছে। চলতি বছরের বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মকর্তাদের বদলি ও দক্ষ লোকদের পদোন্নতি স্বাভাবিক কাজ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরাও। তবে এ প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তারা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়টি দেখতে হবে বলে মত দিয়েছেন তারা।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, রাজস্ব আহরণ চলমান প্রক্রিয়া। এখানে পরিবর্তন না করলে নতুন কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় না। বদলি হয়ে কর্মকর্তারা নতুন দপ্তরে গেলে কর্মপরিকল্পনায় পরিবর্তন আসে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে রাজস্ব আহরণে। এজন্য অর্থবছরের শুরুতে বদলির প্রয়োজন রয়েছে।