রাজস্ব আহরণে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক খাত শতভাগ অটোমেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আমদানি-রফতানি পর্যায়ে শতভাগ পণ্য স্ক্যানিং করে খালাসের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কষ্ট না দিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিভিন্ন অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াসহ এনবিআরের সদস্য এবং শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের দেশে কর-জিডিপি অনুপাত প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের তুলনায় কম উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়ার অটোমেশন নিয়ে কথা হয়েছে। অপেক্ষায় থাকা আইনগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা অটোমেশনের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে চাই। প্রশাসনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ করব। প্রত্যেক জেলায় রাজস্বের নিজস্ব অফিস স্থাপন করা হবে। মানুষের মধ্যে রাজস্ব নিয়ে একটা জাগরণ তৈরি করতে হবে।
অটোমেশন প্রক্রিয়া নিয়ে আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, আমদানি ও রফতানির সময় সব পণ্যই এখন থেকে শতভাগ স্ক্যানিং করা হবে। ১০ শতাংশ স্ক্যানিংয়ের বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, যাতে কোনোভাবেই অনিয়ম না হয়। ভ্যাটের ক্ষেত্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মেশিন বসিয়ে সরাসরি তদারক করা হবে।
রাজস্ব আহরণ করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কষ্ট দেয়া হবে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসায়ীবান্ধব। ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিয়েই রাজস্ব আহরণ করব। আমরা কোনো ব্যবসায়ীকে কষ্ট দিতে চাই না। তাই ব্যবসায়ীদেরও দেশ ও সংস্কারবান্ধব হতে হবে।
এনবিআরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই আর তা অর্জন করতে হবে। এজন্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। যারা কর দেন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন। আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তুলবেন, চা খাবেন, কোনো সমস্যা নেই। তাছাড়া নতুন যারা চাকরিতে আসবেন, তাদের প্রথম দিন থেকেই ভালো কথা শোনাবেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, আগামী জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি ব্যবসা ও রাজস্ববান্ধব ভ্যাট আইন করা হবে।