বঙ্গবন্ধুর নামে থাকা প্রতিষ্ঠানে অনুদানে করছাড় বাতিল করছে সরকারখেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমলদেশে উৎপাদিত প্রসাধনীতে করের বোঝা, আমদানিতে ছাড়ভোজ্যতেল আমদানিতে কমলো ভ্যাটখেজুর আমদানিতে শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের সুপারিশ
No icon

এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে হয়রানি বন্ধে হটলাইন

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এবারের বাজেট থেকেই ঘোষণা আসবে হয়রানি মুক্ত হবে আয়কর এলাকা। এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে যে কোন অভিযোগ জানাতে ২৪ ঘণ্টা খোলা একটি ফোন নাম্বার থাকবে। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ এলে কোন কোর্ট-কাচারি লাগবে না। ৭ দিনের মধ্যেই অ্যাকশন নেয়া হবে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী বাজেট উপলক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪০তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট থেকেই ঘোষণা আসবে হয়রানি মুক্ত হবে আয়কর এলাকা। আমি এনবিআর চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি আপনি যত খুশি ভ্যাট/কর নেন। কিন্তু একজন লোকও যাতে ব্যথা না পান। কেউ যাতে আমার কাছে কোন অভিযোগ নিয়ে না আসে।

উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে মুস্তফা কামাল বলেন, আজ থেকে আপনারা কেউ ঘুষ খাবেন না। ঘুষ দেবেনও না। আর কত খাবেন? সকাল বেলা পাউরুটি তো এক পিসই খান। আগে খেতে পারেননি টাকার অভাবে। এখন টাকা হলেও রোগ শোকের কারণে খেতে পারেন না। সুতরাং সবাই ঘুষ দুর্নীতি মুক্তভাবে কাজ করুন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে আমাকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। বাজেটে অনেক সংস্কার করতে হবে। এরমধ্যে কাস্টমস, ভ্যাট ও ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি সংস্কার হবে। আর এ কারণে ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা হচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের আমি ক্ষমাও করতে পারবো না। আবার তাদের সকলকে জেলেও পাঠাতে পারবো না। তাহলে আমি অর্থনীতি চালাবো কি করে?

বাজেট নিয়ে তিনি বলেন, আসছে বাজেট সংগত কারণেই বড় হবে। একই সঙ্গে সহজ বাজেট প্রণয়ণ করা হবে। এবারের বাজেট সবাই বুঝতে পারবেন। সহজভাবে সুন্দর কথা দিয়ে বাজেট প্রস্তুত করে সংসদে উপস্থাপন করবো। আর এটাই হবে এবারের বাজেটের অন্যান্য বাজেটের তুলনায় সবচেয়ে বড় পার্থক্য। এবারের বাজেট থেকেই ঘোষণা আসবে দুর্নীতি আমরা আর কেউ করবো না। জোর করে কর আদায় করবো না। কারো থেকে প্রয়োজনের বেশি এক টাকাও নেওয়া হবে না। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী দেশপ্রেম থেকে কর দেবেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, এবার বাজেট শুধু একবছরের বাজেট না। এবারের বাজেটেই ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার ভিত উপস্থাপন করা হবে। এবারের বাজেটে কোন এসআরও হবে না।

তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছর দেশে কোন খাতে কর বাড়বে না। প্রয়োজন হলে কর কমানো হবে। কিন্তু করের অর্জন বাড়বে। কারণ, সবাইকে কর দিতে হবে। যিনি অর্থনৈতিকভাবে যত বেশি শক্তিশালী তিনি তত বেশি কর দেবেন। যার সামর্থ্য কম তিনি কম কর দেবেন। আসছে বাজেটে আয়কর আইন সহজ করা হবে। দ্বৈত কর পরিহার করা হবে। সঠিক হারে ভ্যাট আদায় করা হবে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মুস্তফা কামাল বলেন, আমি আপনাদের একজন। আমার কাছে যা আছে আমি আপনাদেরকে তার সবটুকু দেব। আপনাদের থেকে বেশি এক টাকাও নেব না। সরকারের জন্য যা লাগবে শুধু তাই নেব। তবে মেহেরবানি করে কেউ অসাধু উপায় গ্রহণ করবেন না। আপনারা আমাকে কথা দেন আমদানি-রপ্তানি না করে প্রণোদনা নেবেন না, রপ্তানি ইনসেনটিভ নেবেন না, মিথ্যা ঘোষণা দেবেন না, বন্ডের অপব্যবহার করবেন না। আপনারা আমাকে কথা দেন।

সভা সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।