দশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসেরসিগারেটে কর বাড়ানোর আহ্বান এমপিদের
No icon

বছরজুড়েই চাপে থাকবে এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। নতুন অর্থবছরে (২০২২-২৩) তাদের ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানি খরচ বেড়েছে, আয় কমেছে নিম্নবিত্তের, বেড়েছে ডলারের দাম। গতি হারিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। আবার ছাড় পেয়েছে করপোরেট কর। এমন অবস্থায় এনবিআরের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে। আর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে অর্থবছরজুড়েই চাপে থাকতে হবে তাদের।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাস্তবতার আলোকে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাটা কঠিন।বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। চলতি অর্থবছরেও ৩০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি থাকবে। রাজস্ব আহরণ বাড়াতে কর ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। আধুনিকায়ন না হলে রাজস্ব আহরণ বাড়বে না।লক্ষ্যমাত্রা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১ জুলাই থেকে এনবিআরকে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ১৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আদায় করতে হবে। এ জন্য যে ধরনের পরিকল্পনা দরকার, তা অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেননি।

রাজস্ব আহরণে মধ্যবিত্তদের ওপর চাপটা থাকবে বেশি। তবে সংস্কার ছাড়া বিপুল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ায় চাপ থাকবে এনবিআরের ওপরও। বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আদায়ে যে ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন, নীতি সংস্কার কিংবা অন্যান্য সক্ষমতা দরকার, তা নিশ্চিত করা হয়নি। সম্পূরক শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কের সমন্বয় হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি।অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কয়েক অর্থবছর ধরে এনবিআরকে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো নির্দেশনা থাকে না। বলা হচ্ছে, নতুন অর্থবছরে ভ্যাটকে রাজস্ব আহরণের প্রধান খাত ধরা হয়েছে। ভ্যাট থেকেই আয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ১৯২ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১২ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বেশি। এবার আয়কর ১ লাখ ৪ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ হাজার ২৪৪৭ কোটি টাকা বেশি। সম্পূরক শুল্কের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪ হাজার ১০৯ কোটি টাকা বেশি। আমদানি শুল্কের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৬ হাজার ৮৭ কোটি টাকা বেশি। রপ্তানি শুল্ক থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭ কোটি টাকা বেশি। আবগারি শুল্কের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য কর বাবদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা।