অনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবেরমজানে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে কর অব্যাহতিখোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের শুল্ক বাকি ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩৭ চিঠি দিয়েও ব্যর্থ এনবিআরভ্যাটের একক রেট করতে পারলে ফাঁকি কমে যাবেজুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় জাতীয় ভ্যাট দিবস উদযাপন
No icon

ভ্যাটের হারে জটিলতায় বিপাকে ইন্টারনেট সেবা

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনলাইনে ব্যবসা করছেন অনেক উদ্যোক্তা। ইন্টারনেটই এখন তাঁদের মূল হাতিয়ার। এই ইন্টারনেট খরচ বেড়ে গেলে বা সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও বড় সংকটে পাড়বেন তাঁরা। অথচ বাড়তি ভ্যাট আরোপের ফলে বছরে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে মাত্র ৫০ কোটি টাকা। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) বলছে, আইএসপি সেবাদাতারা গ্রাহকদের কাছ থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করে ৫ শতাংশ হারে। পক্ষান্তরে আইএসপিরা পাইকারি ব্র্যান্ডউইডথ আইআইজিদের কাছ থেকে কেনার সময় ভ্যাট দেয় ১৫ শতাংশ হারে ও ব্যান্ডউইডথ বহন করার জন্য এনটিটিএনদের ভ্যাট দেয় আরও ১৫ শতাংশ। মোট ৩৫ শতাংশ ভ্যাট সরকারকে দিতে হচ্ছে আইএসপিদের। একই পক্ষের ওপর বারবার ভ্যাট আরোপ এবং আইএসপিরা ভ্যাট আইনে রিবেট বা অব্যাহতি না পাওয়ার কারণে তাদের খরচ বেড়ে যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।

আইএসপিএবির দাবি, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যায্য ভ্যাটের শিকার হচ্ছে। এখন যে ভ্যাটের কাঠামো রয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে ক্রেতা পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে। বিষয়টি সুরাহার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শরণাপন্ন হয়েছে সংগঠনটি। তারা সুরাহার দাবিতে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কর্মসূচির কথাও ভাবছে।

এ ছাড়া সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক আরও ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। ফলে মোবাইলে কথা বলা, খুদে বার্তা পাঠানো ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও বেড়েছে। অপারেটরদের হিসাবে, এখন প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জে কথা বলা ও খুদে বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার কর পায় ২৫ টাকা। আর মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে সরকার পায় ১৮ টাকার মতো।

ইন্টারনেটনির্ভর হোস্টিং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইউওয়াই হোস্টের ইমরান হোসেন বলেন, ব্রডব্যান্ড বন্ধ মানে আমার ব্যবসা বন্ধ। বাংলাদেশের সব ব্যবসা হয় এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গার্মেন্টস থেকে শুরু করে বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং পর্যন্ত সবকিছু ইন্টারনেটনির্ভর। ফলে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হলে সবকিছু স্থবির হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন ৭০ লাখ ব্যবসায়ী আছেন। সবাই এখন ইন্টারনেটনির্ভর ব্যবসা করছেন। করোনা পরিস্থিতি ইন্টারনেটনির্ভর ব্যবসা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

এক্সনহোস্টের উদ্যোক্তা মাসুমুল হক বলেন, করোনাভাইরাসের কারেণ মার্চ থেকে অফিস বন্ধ তাঁদের। তবে অনলাইনে ব্যবসা চালু আছে। কোনো কারণে ইন্টারনেট বন্ধ বা সাময়িক বন্ধ হলে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। একই কথা বললেন ই-কমার্স উদ্যোগ সদাগরের আরিফ মোহাম্মদ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতির সঙ্গে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রসারকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতের সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মাইসফটের উদ্যোক্তা মো. মঞ্জুরুল হক। ইন্টারনেট সুবিধা ব্যাহত হলে পুরো সফটওয়্যার খাতই স্থবির হয়ে পড়তে পারে। কারণ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে দেশের মানুষের। একই কথা বলছেন, ফেসবুকভিত্তিক অনেক ছোট উদ্যোক্তারাও।