একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল বিকাল ৫টায় অধিবেশন শুরু হয়। এ অধিবেশনেই আগামীকাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে আগামী বাজেট ১২ দশমিক ৬১ ও সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ বড়। এটি দেশের ৪৮তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট। আগামীকাল বেলা ৩টায় অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় এবার ডিজিটাল ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত হবে একটি ভিডিওচিত্র। ভিডিওচিত্রে বর্তমান সরকারের সামগ্রিক সাফল্য তুলে ধরা হবে। তার আগে সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হবে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর তা রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করবেন। এদিন সংসদ ভবনে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
ভ্যাট আইন কার্যকরসহ বেশকিছু নতুন বিষয় থাকতে পারে এবারের বাজেটে। ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করা হতে পারে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্রসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে। ঘোষণা থাকতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির। এছাড়া বেকারদের জন্য ঋণ তহবিল, কৃষকের জন্য পরীক্ষামূলক বীমা প্রকল্প এবং প্রবাসীদের জন্য বীমা সুবিধার ঘোষণাও আসতে পারে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআর-বহির্ভূত কর ১৪ হাজার ৫০০ কোটি, কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি এবং বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা।
বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি হতে পারে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এ ঘাটতি চলতি অর্থবছরের বাজেটে ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। এ হিসেবে আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে ২০ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকার। চলতি অর্থবছরে রয়েছে ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেয়া হবে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আসন্ন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।