ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত পদক্ষেপে বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত পদক্ষেপে বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসছে। যা আগামী মার্চ থেকে দৃশ্যমান হতে পারে। পণ্যের দাম দেখা যাবে ওয়েবসাইটে। কোন বাজারে কী দাম, সেটা সেখানে উল্লেখ থাকবে। কম-বেশি নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। পাশাপাশি চালের বস্তায় উৎপাদনের তারিখ, উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা দর লেখা থাকবে। ফলে কারসাজির সুযোগ থাকবে না।

বুধবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত ত্রৈমাসিক মধ্যাহ্নভোজ সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। এদিকে ওই সভায় বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। এ পরিস্থিতিতে খোলাবাজারে ভর্তুকিমূল্যে পণ্য বিক্রি বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভর পণ্যগুলোতে শুল্ক কমানোরও পরামর্শ দেন বিভিন্ন খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।  সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা থেকে উৎপাদক পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো হবে। ভোক্তা অধিদপ্তর দিয়ে কোনো হয়রানি নয়, বরং পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো হবে। টিসিবির মাধ্যমেও পণ্য বিক্রি বাড়ানো হবে। তাতে বাজারে ক্রেতার চাপ কমে আসবে। 

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে জনবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকে দেখা গেছে, দাবি আদায়ের জন্য ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো রীতিমতো যুদ্ধের মনোভাব নিয়ে সরকারের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা করত। এখন তর্কের জায়গাটা অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কেন যেন অনেকটা সরকারবান্ধব হয়ে গেছে। জনবান্ধব না হয়ে ব্যবসায়ীবান্ধব হয়ে গেছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে পহেলা বৈশাখে বিদেশেও মেলার আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া হস্তশিল্পের প্রসারে বছরজুড়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হবে। এ জন্য ২৩ দেশে কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সভার শুরুতে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, পণ্যমূল্য নির্ভর করে জোগান ও চাহিদার ওপর। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। তবে আমরা উদ্বিগ্ন, পণ্যের দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। তাই সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি শুল্ক কমানোর তাগিদ দেন তিনি। 

এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষিত হলে সবার জন্য ভালো। তবে যেসব ব্যবসায়ী অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা দরকার। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা যথাযথ সহযোগিতা পাচ্ছেন না। রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার তাগিদ দেওয়া হলেও কিছু সমস্যার কারণে তা হচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি বাড়ানো ও আমদানি খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সফিকুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, রোজার আগে সব সময় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। কম দামে আমদানি করা পণ্য যাতে উচ্চ দরে বিক্রি না হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।    

আইসিটি খাতের বেশির ভাগ আয় বিদেশেই থেকে যায় উল্লেখ করে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আলমাস কবির বলেন, ইপিবিতে অনেক ক্ষেত্রে এ আয় যোগ হয় না। আইসিটি খাতের ব্যবসার প্রসারে বাজেট বাড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি।  সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।