বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিযোগ্য সব পণ্য ১ নভেম্বর থেকে স্ক্যানিং করে পাঠানোর শর্ত দিয়েছে দেশটির কোস্ট গার্ড। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এনবিআরকে যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ডের সফরকারী তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল এ বাধ্যবাদকতার কথা জানান। এনবিআর সূত্র এ তথ্য জানা যায়। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শর্তের আলোকে রপ্তানিযোগ্য পণ্য স্ক্যানিং করে পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত ২৫ ও ২৬ আগস্ট ইউএস কোস্ট গার্ডের তিন সদস্যের এটি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে এ মতামত দেন। বাংলাদেশের বন্দর কর্তৃপক্ষ এনবিআরকে জানিয়েছে সব রপ্তানীকৃত পণ্য স্ক্যান করার মতো পর্যাপ্ত স্ক্যানার নেই তাদের কাছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিযোগ্য পণ্য স্ক্যান করে পাঠাতে হলেও আরো দুটি স্ক্যানার প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার এম ফখরুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিযোগ্য পণ্য স্ক্যান করে ছাড় করতে সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে এ শর্ত পূরণ করা কঠিন হবে। তবে এনবিআর দ্রুত এ সমস্যার সমাধানে কাজ করছে।
কোস্ট গার্ডের সুপারিশ বাস্তবায়নে অনুরোধ জানিয়ে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ এনবিআরে চিঠি পাঠিয়ে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের মতামত মূল্যায়ন করা প্রয়োজন বলে তাগিদ দিয়েছেন।
ফয়সাল সামাদ বলেন, ইউএস কোস্ট গার্ড বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে প্রথম ধাপে চলতি মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য রপ্তানিতে বাধ্যতামূলক স্ক্যানার ব্যবহারের কথা বলেছে। আমরাও সংগঠনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ গ্রহণে জোর দাবি জানিয়েছি।
ইউএস কোস্ট গার্ডের আন্তর্জাতিক জাহাজ এবং বন্দর সুবিধা সুরক্ষা (আইএসপিএস) মানদণ্ড অনুযায়ী স্ক্যান করে কনটেইনারের মধ্যে কী আছে তা নিশ্চিত হয়ে ছাড় করাতে বলা হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে মোট ১১টি স্ক্যানার আছে। এরই মধ্যে কোস্ট গার্ডের পরামর্শ মূল্যায়ন করে ১৪টি স্ক্যানার সংগ্রহের জন্য ৫০০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এনবিআর। গত ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের কোথায় স্ক্যানার ব্যবহার করা সম্ভব তা মূল্যায়ন করেছে।
এনবিআর সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান বলেন, ইউএস কোস্ট গার্ড থেকে জানিয়েছে ১ নভেম্বর থেকে রপ্তানীকৃত পণ্যের চালান স্ক্যানারে যাচাই করে ছাড় করাতে হবে। না হলে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিভিন্ন তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের মানদণ্ড নিচের দিকে নামিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা আছে। আমরা চলমান সমস্যার সমাধানে কাজ করছি। আশা করছি সমাধান হবে। তিনি বলেন, আমাদের যদি স্ক্যানার কিনতে সময় লাগে তবে বিকল্প হিসেবে আমদানিতে ব্যবহৃত স্ক্যানারটি রপ্তানিতে ব্যবহারের জন্য নিতে পারি।
বর্তমানে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান বিশ্বে ৭০তম। গত সেপ্টেম্বরে এ বন্দর দিয়ে সর্বোচ্চ দুই লাখ ৭২ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। এক বছরে গড়ে প্রতি মাসে দুই লাখ ৩৩ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। সমুদ্রবন্দর পথে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ৯৮ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা নেওয়া হয়।