সিগারেটে কার্যকর করারোপ না করায় রাজস্ব হারিয়েছে সরকারআরও এক মাস বাড়ল রিটার্ন জমার সময়এনবিআর আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের যাত্রা শুরুনকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর দাবিঅনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবে
No icon

হুন্ডির চাহিদা ও ডলারের দরপতন

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপ ধীর হয়ে গেছে এবং মানি লন্ডারিং বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনানুষ্ঠানিক হুন্ডি বাজারে ডলারের চাহিদা কমেছে এবং সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে ডলার আসতে শুরু করেছে। 

আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ ৪.৬৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৮% বেশি। দেশ যখন বেসরকারি খাতের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি, সার এবং পণ্য ইত্যাদি আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়েছিল, ঠিক তখনই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যায়।

রেমিট্যান্সের এ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পেছনে কী ভূমিকা রয়েছে? আর্থিক বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাংকারদের মতে, এখানে মূলত দুটি কারণ কাজ করছে। প্রথমত, আমদানি বিলের আন্ডার-ইনভয়েসিং উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। আগে এ প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ সরিয়ে নেওয়া হলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।  দ্বিতীয়ত, হুন্ডির মতো অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে মানি লন্ডারিং তথা অর্থপাচার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

তারা বলছেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপ ধীর হয়ে গেছে এবং মানি লন্ডারিং বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনানুষ্ঠানিক হুন্ডি বাজারে ডলারের চাহিদা কমেছে এবং সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে ডলার আসতে শুরু করেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'আমদানিতে আন্ডার-ইনভয়েসিং সাধারণত হুন্ডির চাহিদা বাড়ায়, কিন্তু সম্প্রতি আমদানি কমে যাওয়ায় হুন্ডির চাহিদা কমে গেছে এবং ডলার আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে আসতে শুরু করেছে।' সৈয়দ মাহবুব আরও বলেন, আগস্টের শাসন পটভূমি পরিবর্তনের পর থেকে প্রবাসীরা দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেও রেমিট্যান্স পাঠাতে আনুষ্ঠানিক চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন।

শাসক পরিবর্তনের পর নিষ্ক্রিয় 'অর্থ পাচারকারীরা' ব্যাংকার এবং বিদেশি রেমিট্যান্স ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা হুন্ডির চাহিদা হ্রাসের ক্ষেত্রে আরেকটি সহায়ক কারণ হিসাবে মানি লন্ডারিং হ্রাসকে উল্লেখ করেছেন। একটি প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কান্ট্রি হেড বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর 'বিদেশে অর্থ পাচারে' জড়িত থাকা অনেক রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।

'মানি লন্ডারিং কমে যাওয়ায়, হুন্ডি ডলারের চাহিদা ৬০-৭০% কমে গেছে বলে বিদেশে থাকা ব্রাঞ্চগুলো থেকে আমরা জেনেছি। আগে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো ডলার এখন আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে আসতে শুরু করেছে,' তিনি আরও বলেন। এমটিবি সিইও সৈয়দ মাহবুব বলেন, 'মানি লন্ডারিং ব্যাপকভাবে কমে গেছে, যা হুন্ডির চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। আমরা অতীতে কোভিডের সময়েও হুন্ডি বন্ধ থাকায় আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ার ঘটনা দেখেছি।'