করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো উচিত ছিলকর-ভ্যাটের চাপ আরও বাড়বেবাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় ৩০ পণ্যে কমছে করভোগ্য পণ্যে শুল্ক কমানোর পরামর্শনতুন করের বোঝা না চাপানোর অনুরোধ ডিএসই’র
No icon

বাজেটে শুল্ক বাড়ার খবরে গাড়ি আমদানির হিড়িক

নিয়ম অনুযায়ী বাজেটের তথ্য গোপন থাকার কথা। তবে বাজেট ঘোষণার আগেই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে তথ্য। গাড়ি ব্যবসায়ীরা তা আগেভাগে জেনে যাওয়ায় বাজেট পাসের আগেই আমদানি সেরে ফেলেন। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।গত তিন অর্থবছরের রাজস্ব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি বছর এই খাতে সরকারের রাজস্ব কমছে গড়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা করে। কোন গাড়ির শুল্কহার বাজেটে কী পরিমাণ বাড়বে, নতুন কী নির্দেশনা আসছে তা আগেভাগে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আনার হিড়িক পড়ে বাজেটের আগে।বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এবার সব ধরনের গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক বাড়াতে পারে সরকার। এই তথ্য আগে জেনে যাওয়ায় বাজেট ঘোষণার ঠিক আগেই দুই জাহাজে করে সহস্রাধিক গাড়ি নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে বাজেটের আগের তিন মাসে এভাবে গাড়ি এসেছে প্রায় ৬ হাজার। আমদানি করা এসব গাড়ি থেকে বর্ধিত শুল্ক পাবে না সরকার। অথচ এসব গাড়ি খালাস হবে নতুন বাজেটের পরই।বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, কোন পণ্যের দাম বাড়বে এটা বাজেটের আগে ফাঁস হয়ে যাওয়াটা ঠিক নয়। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়। গাড়িতে ৫০০ শতাংশের বেশি শুল্কহার থাকায় ক্ষতির পরিমাণটাও অনেক বড় হয়। বাজেট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তদের নৈতিকভাবে আরও শক্ত থাকতে হবে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, আমরা দেখছি প্রতি বছর বাজেটের আগে বেশি গাড়ি আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। আবার প্রতি বছর দেখি বাজেটে দাম বাড়ানো হয় গাড়ির। দাম বাড়ানোর এই তথ্যটা আগে জেনে যাওয়ার কারণে হয়তো বাজেটের আগ মুহূর্তে গাড়ি আমদানির হিড়িক পড়ে। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সরকারকে দেখতে হবে। আবার ব্যবসায়ীদেরও সরকারের নিয়মকানুন মানতে হবে।তবে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, গাড়ি এখন আর বিলাস পণ্য নয়। মধ্যবিত্ত শ্রেণিও নানা কারণে ব্যবহার করছে গাড়ি। অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে। ২০ হাজার কোটি টাকার এই খাতে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছে সরকার। তার পরও প্রতি বছর ঢালাওভাবে বাড়ানো হচ্ছে গাড়ির শুল্ক। এ কারণে বাজেটের আগে গাড়ি আনার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা।চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত গাড়ি আমদানি হয়েছে প্রায় ২১ হাজার। এর মধ্যে শেষ তিন মাসে গাড়ি এসেছে ৬ হাজারের বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১৮৩টি গাড়ি এসেছে গত মাসে। মার্চ ও এপ্রিল মাসে গাড়ি এসেছে যথাক্রমে ১ হাজার ৫৬১ ও ১ হাজার ৪৬২টি।

গত মঙ্গলবার ৩ শতাধিক গাড়ি বোঝাই আরেকটি জাহাজ নোঙর করেছে মোংলা বন্দরে। বাজেটের আগে আসা এসব গাড়িতে নতুন শুল্কহার প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু এসব গাড়ি বিক্রি হবে বাজেটের পরে।চলতি অর্থবছরে বাজেটের আগের তিন মাসে গাড়ি আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।চলতি অর্থবছরে আমদানি করা ২১ হাজার গাড়ির বিপরীতে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা শুল্ক পরিশোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, গাড়ির ওপর এবার ১০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কহার বাড়ানো হবে।