করারোপের আগে বাজার প্রভাব বিশ্লেষণ চান ব্যবসায়ীরাআমদানিতে শুল্ক ঝুঁকি মোকাবিলায় পণ্য খালাসে নতুন পদ্ধতি বেক্সিমকোকে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সরকারঅনলাইন আয়কর রিটার্নে দেশীয় প্রযুক্তির সাফল্যবেক্সিমকোর শ্রমিকদের পাওনা শোধ শুরু ৯ মার্চ: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
No icon

আমদানিতে শুল্ক ঝুঁকি মোকাবিলায় পণ্য খালাসে নতুন পদ্ধতি

মিথ্যা ঘোষণায় কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য আমদানি উভয় কাণ্ডেই বিপদে পড়তে হয় আমদানিকারক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। আবার পণ্যের কায়িক পরীক্ষায় দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে আমদানিকারকরা ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হন। বন্দর থেকে পণ্যের খালাস নিয়ে আমদানিকারক ও এনবিআর কর্মকর্তাদের পরস্পরের বিরোধিতাও অনেক। এবার এ ধরণের জটিলতা নিরসন, পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো সমস্যা মোকাবিলায় ‘শুল্ক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা চালু করেছে সরকার।সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে বিধিমালা সম্পর্কে তুলে ধরেছে। সোমবার (১০ মার্চ) এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিধিমালার একটি কপি জাগো নিউজের কাছে রয়েছে।প্রজ্ঞাপনে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বলতে অর্থপাচার, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নসহ আন্তঃদেশীয় সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং শুল্ক ও কর ফাঁকি কার্যক্রমকে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই বিধিমালা আমদানি পণ্য খালাসকে আরও সহজ করবে।

অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় পণ্য আমদানিতেও নজর রাখা বিদ্যমান রয়েছে।এর অংশ হিসেবে আমদানি করা পণ্যকে চার রঙের ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হচ্ছে।শুল্ক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২৫ এর আওতায় আমদানি পণ্য সবুজ, নীল, লাল ও হলুদ রঙের শ্রেণী বিন্যাস করে শুল্কায়নের ব্যবস্থা করা হবে।বিধিমালায় আন্তঃদেশীয় সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে শুল্ক ও কর ফাঁকি মোকাবিলার পদক্ষেপও রয়েছে।এ বিধিমালার আওতায় শুল্ক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিশনারেট (সিআরএমসি) প্রতিষ্ঠা করা হবে। যা শুল্ক ঝুঁকি শনাক্ত ও শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার কাজগুলো করবে।ঝুঁকি শ্রেণিবদ্ধ করার উপায় সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝুঁকির প্রোফাইল তৈরি ও পরিচালনা করা হবে। অনলাইনে ঝুঁকি নিবন্ধন তথ্য প্রতিনিয়ত হালনাগাদও হবে। গোয়েন্দা তথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও উন্নত উপাত্ত বিশ্লেষণের কৌশল প্রয়োগ করে লাল, হলুদ, নীল ও সবুজ ঝুঁকিভিত্তিক লেনে পণ্য চালান শ্রেণিবদ্ধ হবে।

হলুদ লেনের ক্ষেত্রে আমদানি করা পণ্যের চালানে কায়িক পরীক্ষা ছাড়া কেবল পণ্যসংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করা হবে। সবুজ লেনের ক্ষেত্রে কোনো কায়িক পরীক্ষা হবে না; দেখা হবে না কাগজপত্রও। নীল লেনের ক্ষেত্রে কায়িক পরীক্ষা ও কাগজপত্র যাচাই ছাড়াই পণ্য চালান খালাস হবে। কিন্তু সেটা নিরীক্ষার জন্য বিবেচিত হবে। আর লালের ক্ষেত্রে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা হবে। দেখা হবে কাগজপত্রও।বিধিমালায় বলা হয়, সিআরএমসি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে ঝুঁকির প্রবণতা ও প্রকৃতি নির্ধারণ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করবে। জরিপ ও গবেষণাও আছে। এটি সব শুল্ক স্টেশন ও বন্ড কমিশনারেটের জন্য দৈবচয়নের ভিত্তিতে চালান নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণ করবে।এতে আরও বলা হয়েছে- সময়ে সময়ে মানদণ্ডগুলো হালনাগাদ করবে; ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের কার্যকারিতায় নজর দেবে, সেগুলো বোর্ডকে জানাবে, সমন্বয় করবে। বিভিন্ন কার্যক্রমের ফল পর্যালোচনার দায়িত্বও পালন করবে তারা।সিআরএমসি নামের স্বত্ত্বাটি যেকোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, আমদানি ও রপ্তানি সম্পর্কিত যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থার কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবে। তথ্য বিশ্লেষণের প্রয়োজনে অন্যান্য সংস্থার সহায়তাও নিতে পারবে তারা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে থেকে বা গোপন তথ্যদাতাদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য সংগ্রহ করবে। বিশ্লেষণের পাশাপাশি এসব তথ্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হবে।