অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী বাজেটে করের হার বাড়ানো হবে না। এবার আমরা কোনোভাবেই কোথাও কর বাড়াবো না। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক, বর্তমান গভর্নরদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও ইফতার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর কমানো হবে। এবার হয়তো বেশি কমাতে পারব না। তবে আগামীতে করের হার আরো বেশি কমাবো। তবে করের আওতা বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়াবো। মন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে করদাতার সংখ্যা ২২ লাখ থেকে ১ কোটিতে উন্নীত করা হবে। তবে এজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক রাজস্ব জনবল নেই বিধায় বিপুল আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এটা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ৪ কোটি মানুষ আছে। যারা আয়কর দেওয়ার উপযুক্ত। আওতা বাড়িয়ে এসব মানুষকে যদি করের আওতায় আনতে পারি তাহলে আমাদের ট্যাক্স জিডিপির অনুপাত অনেক বেড়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা অনেক আউট সোর্স করব। কারণ যে পরিমাণ রাজস্ব আদায়ে লোকবল প্রয়োজন সে পরিমাণ এত অল্প সময়ে পাওয়া যাবে না। তাই আউট সোর্সের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করা হবে। এ ছাড়া, রাজস্ব অফিস প্রতিটি উপজেলায় যাবে। যদি প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে একই উপজেলায় তিন থেকে চারটি রাজস্ব অফিস দেওয়া হবে। চাহিদার ওপর অফিসের সংখ্যা নির্ভর করবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, প্রতীক্ষিত নতুন ভ্যাট আইনটি আগামী বাজেট থেকে বাস্তবায়ন করব। সেটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে আজকে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাপরিচালক ও পর্যদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত সারা বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা এটি বাড়ানোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। কর হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া, ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক হার বাড়ানো যৌক্তিক হয়নি। ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে আরো বেশি গতিশীল করতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সম্প্রসারণে আরো উদ্যোগের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে সরকারের সেবা পৌছাতে হলে এসব খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
ভ্যাট আইনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনযোগ্য। আইন বাস্তবায়নের পরও যদি কোথাও কোনো সীমাবদ্ধতা দেখা দেয় তাহলে তা পরিবর্তন করা হবে। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার সঙ্গে ঝামেলাহীনভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। ভ্যাট আইন আমরা ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন করব। কোনো পণ্যে ভ্যাট বাড়বে না বরং কমবে। তবে আমরা ভ্যাটের আওতা বাড়াব। আমরা সব কিছুই সুন্দরমতো করব।