অনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবেরমজানে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে কর অব্যাহতিখোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের শুল্ক বাকি ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩৭ চিঠি দিয়েও ব্যর্থ এনবিআরভ্যাটের একক রেট করতে পারলে ফাঁকি কমে যাবেজুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় জাতীয় ভ্যাট দিবস উদযাপন
No icon

কর কার্ড পেল ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

অন্যবারের মতো এবারও সেরা করদাতা হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১৪১টি ট্যাক্স কার্ড বা কর কার্ড দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে ব্যক্তি রয়েছেন ৭৪ জন, বাকি ৬৭টি প্রতিষ্ঠান। গতকাল বৃহস্পতিবার র‍্যাডিসন হোটেলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে এসব ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের হাতে কর কার্ড ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে তিনজন সর্বোচ্চ করদাতা, দুজন দীর্ঘ সময় ধরে কর প্রদানকারী এবং একজন করে নারী ও তরুণ করদাতাকে সম্মাননা হিসেবে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে চার কোটি মানুষ মধ্যম আয়ে পৌঁছে গেছেন, কিন্তু তাঁরা কর দেন না। তাঁরা আশঙ্কা করেন, একবার কর দিলে সারা জীবনের জন্য করজালে ঢুকে যাবেন। মন্ত্রী আরও বলেন, কর হার কমাব। এ জন্য কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি বিশ্লেষণ করে বলবে, কর কত কমালে কর আদায় কমবে না।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান আশা প্রকাশ বলেন, ভবিষ্যতে সেরা করদাতাদের তালিকা আরও দীর্ঘ হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি তাঁর বক্তব্যে কয়েক বছর ধরে সেরা করদাতা হওয়া কাউছ মিয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, কাউছ মিয়া বছরে ৪৩-৪৫ কোটি টাকা কর দেন। অন্য শ্রেণিতে যাঁরা সর্বোচ্চ কর দেন, তাঁরা কেউ কাউছ মিয়ার ধারেকাছে নেই। এ সময় তিনি কাউছ মিয়াকে মঞ্চে ডেকে অতিথিদের সঙ্গে আসন গ্রহণ করতে বলেন। পরে এনবিআরের অনুরোধে কাউছ মিয়া নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

কোন শ্রেণিতে কারা কর কার্ড পেলেন

জ্যেষ্ঠ নাগরিক: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ও বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) গোলাম দস্তগীর গাজী, খন্দকার বদরুল হাসান, অনিতা চৌধুরী এর আলীহোসাইন আকবরআলী ও মোস্তাফিজুর রহমান।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা: ঢাকার কর অঞ্চল-৯ এর লে. জেনারেল (অব.) আবু সালেহ মো. নাসিম, কর অঞ্চল-৪ এর এস এম আবদুল ওয়াহাব ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের আল মামুন সরকার।

প্রতিবন্ধী: সুকর্ণ ঘোষ, ঢাকার আকরাম মাহমুদ ও সিলেটের মামুনুর রশিদ।

নারী: রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন, লায়লা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, পাবনার রত্না পাত্র ও কর অঞ্চল ৬-এর মাহমুদা আলী শিকদার।

তরুণ: এলটিইউর করদাতা নাফিস সিকদার, ঢাকার কর অঞ্চল-৪ এর গাজী গোলাম মর্তুজা, কর অঞ্চল-৩ এর মেহেদী হাসান, ময়মনসিংহের আবু রায়হান রুবেল ও ঢাকা কর অঞ্চল-১০ এর জুলফিকার হোসেন মাসুদ রানা।

ব্যবসায়ী: ঢাকার কর অঞ্চল ২ এর মো. কাউছ মিয়া, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের সৈয়দ আবুল হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৫ এর কামরুল আশরাফ খান, চট্টগ্রামের কর অঞ্চল-৪ এর মোহাম্মদ কামাল ও ঢাকা কর অঞ্চল-১২ এর আসলাম সেরনিয়াবাত।

বেতনভোগী: এ শ্রেণির পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই একই পরিবারের: মোহাম্মদ ইউসুফ, খাজা তাজমহল ও এম এ হায়দার হোসেন। অন্যরা হলেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির এবং ঢাকার কর অঞ্চল-৭ এর করদাতা ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।

চিকিৎসক: পাঁচ করদাতাই কর অঞ্চল ১০ এর: এ কে এম ফজলুল হক, প্রাণ গোপাল দত্ত, এম এ এম মোমেনুজ্জামান, নার্গিস ফাতেমা ও শামসুল আরেফিন।

সাংবাদিক: এই শ্রেণিতে আছেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেক, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ ও সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল।

আইনজীবী: এ শ্রেণির সবাই কর অঞ্চল ৮-এর। তালিকায় আছেন সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, নিহাদ কবির, আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন ও রফিকউল হক।

প্রকৌশলী: ঢাকার রেজাউল করিম, শাহ মোহাম্মদ হান্নান ও চট্টগ্রামের এস এম আবু সুফিয়ান।

স্থপতি: ঢাকার ফয়েজ উল্লাহ, রফিক আজম ও গোলাম আজম সিজার।

হিসাবরক্ষক (অ্যাকাউন্ট্যান্ট): ঢাকার মোক্তার হোসেন, মনজুরুল আলম ও মোহাম্মদ ফারুক।

নতুন করদাতা: ঢাকার মতিউর রহমান, সিলেটের সৈয়দা জমিলা বেগম, মিরাজুল ইসলাম, ঢাকার হোসনে নুজহাত, নারগিছ আকতার, মিয়া মো. রেজুয়ান কবির ও সোনিয়া সারহা পিংকি।

খেলোয়াড়: এ শ্রেণিতে আছেন তিন ক্রিকেটার। কর অঞ্চল ১ এর তামিম ইকবাল, কর অঞ্চল ৭ এর সাকিব আল হাসান ও কর অঞ্চল-১ এর মাশরাফি বিন মুর্তজা।

অভিনেতা-অভিনেত্রী: আনিসুল ইসলাম হিরু, ফরিদা আক্তার ববিতা ও শাকিব খান।

গায়ক-গায়িকা: তাহসান রহমান খান, এস ডি রুবেল ও মমতাজ বেগম।

অন্যান্য: এলটিইউর শওকত আলী চৌধুরী, নজরুল ইসলাম মজুমদার ও আকতার মতিন চৌধুরী।

প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কর কার্ড পেয়েছে যারা

ব্যাংক: ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এইচএসবিসি, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও ইউসিবিএল।

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান: ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড।

প্রকৌশল: বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি, খুলনা শিপইয়ার্ড ও বিএসআরএম স্টিলস।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক: নেসলে বাংলাদেশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ।

জ্বালানি: তিতাস গ্যাস, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)।

পাটশিল্প: আকিজ জুট মিলস, জনতা জুট মিলস ও সুপার জুট মিলস।

স্পিনিং ও টেক্সটাইল: কোটস বাংলাদেশ, বাদশা টেক্সটাইলস, এ সি এস টেক্সটাইলস, নোমান টেরিটাওয়েল মিলস, এপেক্স টেক্সটাইল, এনভয় টেক্সটাইল ও ফখরুদ্দীন টেক্সটাইল মিলস।

ওষুধ ও রসায়ন: ইউনিলিভার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস ও রেনাটা লিমিটেড।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া: মিডিয়াস্টার লিমিটেড, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড, ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড ও মিডিয়া ওয়ার্ল্ড।

আবাসন: র‌্যাংগস প্রপার্টিজ, ইক্যুইটি প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট ও বে ডেভেলপমেন্টস।

তৈরি পোশাক: ইয়াংওয়ান হাইটেক স্পোর্টসওয়্যার, রিফাত গার্মেন্টস, জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ, হা-মীম ডেনিম, দ্যাটস ইট স্পোর্টসওয়্যার, প্যাসিফিক জিনস ও ফোর এইচ ফ্যাশন।

চামড়াশিল্প: বাটা শু, এপেক্স ফুটওয়্যার ও এটলাস ফুটওয়্যার।

টেলিযোগাযোগ: গ্রামীণফোন।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কর কার্ড পেয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স, সাধারণ বীমা করপোরেশন, তমা কনস্ট্রাকশন, এস এন করপোরেশন, মেসার্স এ এস বি এস, মেসার্স ছালেহ আহম্মদ, ঢাকার ভাটারার ওয়ালটন প্লাজা, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, মোংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, বেসরকারি সংস্থা আশা, ব্যুরো বাংলাদেশ ও আর এস ট্রেডিং।