আয়কর দেয়ার সক্ষমতা আছে, কিন্তু দেয় না- এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের খোঁজে মাঠ জরিপ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির বিভিন্ন কর অঞ্চলে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে করদাতার সংখ্যা এক কোটি বানানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এনবিআর। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশব্যাপী জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে বোর্ড। এরই অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ে ২১৩টি জরিপ টিম গঠন করা হয়েছে। ওই জরিপ টিম বাড়ি বাড়ি গিয়ে যারা কর দিচ্ছেন ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন-টিন) রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করছেন।
টিআইএন নম্বরধারীদের রিটার্ন দাখিলের জন্য বাধ্য করা হবে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে ৪৬ লাখ টিআইএন নম্বরধারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেছেন ২২ লাখ। যারা এখনো রিটার্ন দাখিল করেননি তাদের করাঞ্চলের কর্মকর্তারা ফোন করবে। আগামী জানুয়ারি প্রত্যেক টিআইএনধারীকে (যারা এখনো করেননি) রিটার্ন দাখিল করতে বলা হবে। তাদের মধ্যে যারা আয়কর দেয়ার যোগ্য তাদের করসহ রিটার্ন দাখিলে বাধ্য করা হবে।
রাজস্ব আহরণের তথ্য তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৬৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা কম। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি। এরমধ্যে কাস্টমসে রাজস্ব আদায় প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ। ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ইনকাম ট্যাক্স আহরণের প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তাই লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
এদিকে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় দেয়া বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, নতুন করদাতা শনাক্তকরণ ও জনগণকে আয়কর বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণের সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রসারণের মাধ্যমে সংগঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে কর জরিপের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান করের বাইরে রয়েছেন তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে করের আওতায় আনার জন্য এ জরিপ কার্যক্রম চলছে।
ব্যবসা/গৃহ সম্পত্তি আয় রয়েছে এমন অথবা চাকরি পেশায় নিয়োজিত করদাতাকে টিমের সদস্যদের নিকট জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যবসার লাইসেন্স সহ অন্যান্য তথ্য প্রদান করে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে বলেছে এনবিআর।
নাগরিকরা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে ই-টিআইএন গ্রহণ করে কর নেটে যুক্ত হতে পারেন। আর ইতোমধ্যে যারা কর নেটে যুক্ত হয়েছেন তাদেরকে দৃশ্যমান স্থানে ই-টিআইএন সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখার জন্য এনবিআরের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।