ইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবেউল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেই
No icon

যানবাহনের নম্বর প্লেট থেকে আয়ের পরিকল্পনা

নিলামের মাধ্যমে পছন্দের যানবাহনের নম্বর প্লেট বিক্রি করে রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ পরিকল্পনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, উপযুক্ত সরবরাহকারী না পাওয়ায় নতুন দরপত্র আহ্বান করা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে পছন্দের যানবাহনের নম্বর প্লেট নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়ার প্রচলন আছে। এ থেকে প্রচুর রাজস্ব আদায় করা সম্ভব। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া আয় করে। যত সুন্দর নম্বর তার দামও তত বেশি। আমাদের দেশেও শুরু করব। এ থেকে কিছু রাজস্ব আসলে তো ভালো।

কবে নাগাদ এ প্রক্রিয়া শুরু হবে, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কবে শুরু হবে, তা তো বলা যাবে না। চিন্তা তো ছয় বছর ধরে করছি। আজ সবাই কথা দিয়েছে, আশা করি, সময় বেশি লাগবে না। সময় কিছুটা লাগলেও কাজটা ভালো হলে রাজস্ব তো আসবে।

নম্বরগুলো কেমন হবে বা মালিকের নামের সঙ্গে ১, ২, ৩- এরকম হতে পারে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে যে রকম, সে রকম হবে। এটার ওপর কাজ করতে হবে। চায়নার পলিসি এখানে চলবে না। তাদের ৪ নম্বর দিয়ে কিছু হয় না, ওরা অত্যন্ত ক্রেজি ৮ নম্বর নিয়ে। আমরাও দেশে ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে রূপরেখা তৈরি করব। সেভাবে করতে পারলে দাম ভালো পাব। বিদেশ যেভাবে অর্জন করছে, সেভাবে অর্জন করব।

বিদেশে পদে পদে রাজস্ব আদায় করা হয়, এর উদাহারণ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বাসা থেকে বের হলেও তো পে করতে হয়- কোনো না কোনোভোবে রেভিনিউ, গাড়ি যেখানে দাঁড় করিয়ে রাখবেন সেখানেও রেভিনিউ। আমাদের দেশে এগুলো অর্জন করলে যোগাযোগ ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ এগুলো দিযে করা সম্ভব হবে। অর্জন করার ক্ষমতা আমাদের আছে। শুধু এগুলো এখন বাস্তায়ন করতে হবে।

প্রতি পদক্ষেপে টাকা দিতে হলে জনগণ ক্ষেপে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, নাগরিকদের চাহিদা একটাই- টাকা অর্জন। তাদেরকে টাকা অর্জনের ব্যবস্থা করে দিতে পারলে, তারা সুখে-শান্তিতে টাকা অর্জন করতে পারলে খরচ করতে প্রস্তুত। আয়ের পথ না দিয়ে তো অর্থ চাওয়া যাবে না।

দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশে শেয়ারবাজারের সূচক ১ হাজার থেকে শূনতে আসলে এসইসি চেয়ারম্যানকে গালিও দেবে না, মারতেও যাবে না, রাস্তায় গাড়িও ভাঙবে না। আমি জানি না কেন, সবদিকেই ভালো, শুধু এক জায়গায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে আমাদের মিল নেই।

পুঁজিবাজারে দরপতন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের প্রথম ঘণ্টায় সূচক যখন বাড়ে তখন যারা ইনভেস্ট করেছে তারা পায়। দ্বিতীয় ঘণ্টায় আবার দাম কমে যায়। দ্বিতীয় ঘণ্টায় কমার পর যেটা স্থিতি হয়, এটাকে বলা হয় সেই দিনের স্থিতি বা এটা কমে গেছে। কে জিতলো আর কে হারলো নিজের মনকে প্রশ্ন কর।

টানা সূচক পড়তে থাকলে সমস্যা বাড়তে থাকবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। কেউ আয় করবে, কেউ লস করবে- দুইটা একসাথে হয়ত হবে না। সরকারের যে দায়িত্ব সেখানে গুড গভর্নেন্স থাকতে হবে। যারা অপরাধ করবে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে সেখানে এজন্য রেগুলেটর আছে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পুঁজিবাজারের মূল ভিত্তি হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতি যত শক্তিশালী হবে পুঁজিবাজার তত শক্তিশালী হতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের এখানে সেটা ঘটে না। কেন হয় না, সময় আসলে হয়ত বলা যাবে, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে করে কি না? এটা তো একটা রিফ্লেকশন। ভারতও বলছে, আমরা অনেক এগিয়েছি। ভিয়েতনামের গ্রোথ আমাদের চেয়ে বেশি না। যারা ট্রেড করে তাদের সঙ্গে মিলে যদি বোঝানো যায়, তাহলে এ কাজ করবে না।

তিনি বলেন, আমাকে দেখতে হবে, ব্যাংকগুলো ম্যানুপুলেট করে কি না। যে শেয়ারগুলো বাজারে আসে ম্যানুপুলেট হয় কি না। মুনাফা হওয়ার পরও মুনাফা ঘোষণা না দিয়ে ডিভিডেন্ট পকেটে নেয় কি না। আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হলে এর প্রতিফলন পুঁজিবাজারে আসতে বাধ্য, আজ না হলে আগামীকাল আসতে হবেই।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে যেভাবে শেয়ারকে প্রাইসিং করা হতো সেভাবে এখন হয় না। এখন রেগুলেটর ও অপারেটররা সব সময় আলাপ-আলোচনা করে। যেখানে নীতি-নির্দেশনার অভাব থাকে বা নির্দেশনা আরো শক্তিশালী করা দরকার, সেগুলো থাকলে, টেককেয়ার থাকলে, মনে হয়, ভালো হবে।