কর দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ এবং জনগণকে আয়করের বিবরণী দাখিলে আরও উত্সাহিত করতে এক পাতার আয়কর রিটার্ন ফর্ম চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করযোগ্য আয় যাদের চার লাখ টাকা ও যাদের মোট সম্পদ ৪০ লাখ টাকার বেশি নয় এমন ব্যক্তি করদাতারা সদ্য চালু হওয়া ট্যাক্স রিটার্ন ফর্মটি ব্যবহার করতে পারবেন। ১৯৮৪ সালের আয়কর বিধি অনুসারে নতুন ফর্মটি ১ জুলাই থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন ইস্যু করা হয়েছে বলে সংস্থাটির সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যার কাছে মোটর গাড়ি রয়েছে বা তার বাড়ির সম্পত্তিতে বিনিয়োগ রয়েছে বা সিটি করপোরেশন এলাকায় অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তারা এক পৃষ্ঠার ট্যাক্স রিটার্ন ফর্মটি ব্যবহারের যোগ্য হবে না।
নতুন ফর্ম অনুসারে, একজন ব্যক্তিকে তার মোট করযোগ্য আয়ের তথ্য, মোট সম্পদ, করের পরিমাণ, ব্যাংকের নাম এবং চালন নম্বর, আয়ের উত্স, নাম, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানাসহ অন্যান্য সাধারণ তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), মূল্যায়ন বছর এবং কর অঞ্চলের নাম লিখতে হবে।
একই সঙ্গে করদাতাকে ঘোষণা দিতে হবে তিনি এ ফর্মের যোগ্য। তিনি কোনো মোটর গাড়ির মালিক নন বা কোনো সিটি করপোরেশন অঞ্চলে বাড়ির সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করেননি।
এ বিষয়ে আয়কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এনবিআর আয়কর রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সরলকরণের অংশ হিসাবে এই ফর্মটি প্রবর্তন করেছে। যাতে প্রান্তিক করদাতারা সহজেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে পারে। নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ের করদাতারা সহজে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কর আইনজীবীদের বা অন্যের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রান্তিক করদাতাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার সুবিধার্থে সহজে রিটার্ন জমা দেওয়া যায় এমন ফর্ম চালু করার ঘোষণা দেন।
সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত করদাতাদের মধ্যে যাদের ২৫ লাখ লাখ টাকার সম্পদের মালিকানা রয়েছে তাদের রিটার্নের সাথে সম্পদ, দায়বদ্ধতা এবং জীবনধারা সম্পর্কিত বিবৃতি হিসাবে পরিচিত, বিবৃতি দাখিল করা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমানে দেশে টিআইএনধারী রয়েছে ৪৬ লাখের বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছেন প্রায় ২২ লাখ করদাতা। ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ব্যবসায় ন্যূনতম কর বসানো হয়েছে।
তিন কোটি টাকার বেশি বার্ষিক টার্নওভারযুক্ত সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম করের আওতায় আনা হয়েছে। লোকসান হলেও টার্নওভারের সীমা অতিক্রম করলে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। অর্থাৎ তিন কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে লাভ-লোকসান যাই হোক না কেন, ন্যূনতম দেড় লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। সব ধরনের ব্যবসায় এ করের আওতায় পড়বে।