করোনাকালে দোকানমালিকদের জন্য বিপদ নিয়ে এল উৎসে আয়কর। দোকানমালিকেরা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে দেখছেন, তাঁদের এ ক্ষেত্রে ব্যয় আগের চেয়ে ছয় গুণ বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি আজ সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে একে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, এখন ট্রেড লাইসেন্সের নির্ধারিত ফি বা মাশুলের ওপর উৎসে কর ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫০০ টাকার জায়গায় ৩ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশনে ৩০০ টাকার জায়গায় ২ হাজার টাকা, জেলা শহরে ৩০০ টাকার জায়গায় ১ হাজার টাকা ও পৌরসভায় ১০০ টাকার জায়গায় ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে।
মূলত এই কর বাড়ানো হয়েছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এখন আমাদের সদস্যরা লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে এই বাড়তি করের মুখে পড়ছেন। হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, করোনাকালে দোকানমালিকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাঁদের বিক্রি একেবারেই কমে গেছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ সময় ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে এই বাড়তি কর তাঁদের আরও বিপাকে ফেলবে।
২০১৯ সালের ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠিয়েছিল। প্রতিবেদনে লাইসেন্সের বাড়তি ব্যয়ের প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, নতুন হারের কারণে ব্যবসার খরচ বাড়বে এবং ব্যবসায়ের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই হার কার্যকর হলে বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা শুরুর সূচকে ব্যয় বাড়বে অন্তত ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
এদিকে দোকান মালিক সমিতি আজ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে, করোনার সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর দুই মাস দোকানপাটসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। সমিতি বলছে, ব্যবসায়ীর আয় হলে আয়কর দেবেন। কিন্তু উৎসে আদায় করার ফলে ছোট ব্যবসায়ীরা, যাঁরা আয়করের আওতায় পড়বেনই না, তাঁদেরও আয়কর দিতে হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের কোনো অর্থ ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পাননি। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি কর অমানবিক। তাঁরা এটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।